আহমেদ সিরাজ:
আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এই দিনে এমন একজন নারীকে তুলে ধরতে চাই, যিনি সংবাদ জগতে নীরবে নিভৃতে নতুন সম্ভাবনার আলো ছড়াচ্ছেন। তিনি রিয়া রানী মোদক—একজন উদীয়মান নারী সাংবাদিক। যিনি সাহসী লেখনী এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নারী সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
রিয়া মোদকের সাংবাদিকতা যাত্রা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে পড়াশোনা করার পাশাপাশি তিনি হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় কাজ করছেন।
নারী হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় প্রবেশ করা সহজ ছিল না। রিয়া প্রথম থেকেই নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন—সাংবাদিকতার বৈরী পরিবেশ, তথ্য সংগ্রহের জটিলতা, এবং কখনো কখনো সামাজিক প্রতিরোধ। কিন্তু কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারেনি। বরং এসব চ্যালেঞ্জই তাকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করেছে।
রিয়া মোদক তার লেখনীতে সবসময়ই নারীদের অধিকার, ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার বাধা, এবং সামাজিক অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। বিশেষ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা, প্রশাসনিক জটিলতা এবং শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ নিয়ে তার লেখাগুলো ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
নারীদের সাংবাদিকতায় আগ্রহী করতে এবং তাদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে তিনি সবসময় সোচ্চার। তার মতে, “নারীরা সাহস নিয়ে সামনে এলে সাংবাদিকতা জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।”
রিয়ার একক মৌলিক প্রতিবেদন, বিশেষ প্রতিবেদনের গুণগত মান, ভাষার সংযোজন ও সংগঠনের দক্ষতার কারণে তিনি সাংবাদিকতায় প্রশংসিত হয়েছেন বেশ কয়েকবার। ২০২৪ সালে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির পক্ষ থেকে তিনি ষান্মাসিক ‘সেরা প্রতিবেদক’ পুরস্কার অর্জন করেন। তার সাহসী সাংবাদিকতা ও গবেষণাধর্মী লেখাগুলো তাকে ভবিষ্যতে আরও বড় স্বীকৃতি এনে দেবে বলে ধারণা করা যায়।
রিয়া মোদক বিশ্বাস করেন, সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। তিনি ভবিষ্যতে নারী সাংবাদিকদের জন্য আরও অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে চান। তার ইচ্ছা, বাংলাদেশে এমন একটি কর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রখা, যেখানে নারী সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও সমান সুযোগ থাকবে।
রিয়া মোদকের মতো তরুণ সাংবাদিকরা সমাজের প্রতিচ্ছবি পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার। তার সাহসী কলম নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখছে এবং আগামী দিনগুলোতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। নারী দিবসে আমরা তাকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন—সাংবাদিকতার এই পথচলা আরও দূর এগিয়ে যাক, নারীদের কণ্ঠস্বর আরও উচ্চকিত হোক। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হোক অন্যান্য ক্যাম্পাসের নারীরা, যুক্ত হোক সাংবাদিকতায়।
এমআই