মোঃ ইমরান মাহমুদ, জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কে.জি. এস. মহর সোবহান মফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস. এম. জুলফিকার রহমান লেবুকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করছে পুলিশ। এ ঘটনায় সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের ছবিলাপুর গ্রামে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে মেলান্দহ থানা পুলিশ।
এস. এম. জুলফিকার আলীকে গ্রেফতারে প্রতিবাদে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
মেলান্দহ থানায় গত বছরের (২৯ অক্টোবর) মেলান্দহ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম ও অজ্ঞাতো আরো ৩০-৪০ জন উল্লেখ করে একটি নাশকতার মামলা দায়ের করেন। সেই নাশকার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সেই মামলার এজাহার নামীয় আসামি ছিলেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জুলফিকার আলী তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখক, কথা সাহিত্যিক হিসেবে বেশ পরিচিত। এছাড়া তিনি বৃক্ষ প্রেমিক হিসেবে জেলা জুড়ে বেশ পরিচিতি রয়েছে। তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি বইও রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন, হাটবাজার, রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা রোপন রোপন করে থাকেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত।
ছবিলাপুর গ্রামের বাসিন্দা লোমান জামালি নামে একজন বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি লেবু স্যার একজন নিতান্ত ভদ্রলোক। তিনি একজন পরোপকারী মানুষ। শিক্ষকতার পাশাপাশি বৃক্ষ প্রেমিক নামে আমাদের মাঝে পরিচিত। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক কাজ করেন। আমার জানামতে তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নয়। তাকে মিথ্যা ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
কে.জি.এস. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ বলেন, স্যারকে যতদিন থেকেই চিনি সামাজিক মানুষ। তিনি মানুষের সাথে সবসময় হাসি খুশি মুখে কথা বলেন। আমার মনে হয় স্যারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
জুলফিকার আলীর ছোট ভাই জাহিদ সরকার বলেন, আমার ভাই কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নয়। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি তিনি বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে আসছেন। বিদ্যালয়ের জমি জমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মামলা চলে আসছিল। সেই প্রতিহিংসা থেকেই আমার ভাইকে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এই মিথ্যা মামলা থেকে আমার মুক্তি চাই।
জুলফিকার আলীর বৃদ্ধা মা জুলেখা বেগম খুকি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার পোলাডা পরোপকারী। আমার পোলা তো রাজনীতি করে না। কোনো অপরাধ তো করে নাই। বিনা অপরাধে পুলিশ কেন ধরে নিয়ে গেছে? মানুষ অন্যায়ভাবে তারে ধরিয়ে দিছে। আমার পোলার মুক্তি চাই।
মামলার বাদী মেলান্দহ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোঃ মনোয়ার হোসেনের মোবাইলে একাধিক বার কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ফেসবুকে কিছু ছবিও পেয়েছি।