মো. মাহিদুজ্জামান সিয়াম, গবি প্রতিনিধি:
শিশু আছিয়ার ধর্ষণকারীদের ফাঁসি কার্যকর, দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণ প্রতিরোধ, ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত ও নারী সহ দেশের সকল নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন থেকে শুরু করে বাদামতলা, প্রধান ফটক ও ঘোড়াপীর মাজার ঘুরে একই স্থানে এসে বিক্ষোভ মিছিল শেষ হয়।
এ সময় 'তুমি কে, আমি কে, আছিয়া আছিয়া', 'একটা একটা ধর্ষক ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর', 'ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আগুন জ্বালো একসাথে', 'আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই', 'সারা বাংলায় খবর দে ধর্ষকদের কবর দে', 'এক দুই তিন চার, জাহাঙ্গীর তুই গদি ছাড়' সহ নানা প্রতিবাদী স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা।
রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কার্যক্রমের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিম খান বলেন, 'দেশের একজন অথর্ব আইন উপদেষ্টা রয়েছে যিনি টকশোতে দেশের সব কাজ করার সমর্থ্য রাখেন কিন্তু বাস্তবে এখনো পর্যন্ত কোন দৃষ্টান্তমূলক বিচার কার্যক্রম দেখাতে পারলেন না। ৮ বছরের শিশু আছিয়ার ধর্ষণকদের সর্বনিম্ন শাস্তি হতে হবে ফাঁসি এবং ধর্ষণ মামলার জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করতে হবে যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হয়। নোচেত আমরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।”
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নিজ কাজের অপারদর্শিতা ও ব্যর্থতা প্রশ্ন তুলে পদত্যাগের দাবিও তোলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ধর্ষকের শাস্তিযোগ্য বিচারের দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদা নূরী বলেন, 'বর্তমানে বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে কোনো বয়সের ভেদাভেদ নেই, আট বছরের শিশু থেকে শুরু করে আশি বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষিত হচ্ছে। মানুষের বিবেকের মধ্যে আসেনা নারীর প্রতি কীরুপ আচরণ হওয়া উচিত। ধর্ষনের পরিমাণ এতই বেড়ে গেছে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হবে, সুতরাং প্রশাসনের উচিৎ দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।'
ধর্ষকদের সমাজের কলঙ্ক আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আশিক বলেন, 'এদের কোনো মানবিকতা নেই, এরা অমানুষ! এমন ঘৃণ্য অপরাধের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া উচিত, যেন ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের জঘন্য কাজ করার সাহস না পায়। রাষ্ট্রের উচিত কঠোর আইন প্রয়োগ করা, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা এবং অপরাধীদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া, যাতে পরবর্তীতে কেউ ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজে লিপ্ত হতে ভয় পায়। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং শিশুদের জন্য এমন নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে তারা ভয় ছাড়া বেড়ে উঠতে পারে।'
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে চলমান নৈরাজ্য এবং নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতেও প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে গবি শিক্ষার্থীরা।