চবি প্রতিনিধি:
পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের (শহীদ হৃদয় তরুয়া ভবন) শিক্ষক লাউঞ্জে এ আয়োজন করা হয়।
চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আজহার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-চবি উপউপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আল-আমীন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, হালদা গবেষক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া।
আরও উপস্থিত ছিলেন-সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান, শহীদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. একেএম আরিফুল হক সিদ্দিকী, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী ও নাজমুল হোসাইন, চবিসাসের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক ও বাইজিদ ইমন
এসময় চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, রমজান মাস হলো আত্মশুদ্ধির মাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রাজনৈতিক সংগঠনকে নিজেদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে ক্যাম্পাসে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি সবার মাঝে সুসম্পর্ক তৈরির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
অনুষ্ঠানে চবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী বলেন, আজকের এই ইফতারে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক ছাদের নিচে মিলিত হয়েছে। একটা কথা বলতেই হয়, দীর্ঘ ৯ বছর পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ইসলামি ছাত্রশিবিরকে ইফতার মাহফিলে দাওয়াত করেছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। ফ্যাসিবাদের আমলে হয়তো কোন এক ঝুজুর ভয়ে সাংবাদিক সমিতিও ছাত্রশিবির কে দাওয়াত দিতে সক্ষম হয়নি। রমজান মাস হলো তাকওয়া অর্জনের মাস। সাংবাদিকতার মাঝেও একধরণের তাকওয়া রয়েছে। কেউ কোনো তথ্য দিলেই তার উপর ভিত্তি করে সংবাদ প্রকাশ না করে আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করবেন। আগামীতে যেকোনো কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সাংবাদিক সমিতিকে অনেক বেশি স্বাধীনচেতা হওয়া উচিত বলে করি।
চবিসাস সভাপতি মোহাম্মদ আজহার বলেন, এ বছরের ইফতার মাহফিল আমরা ব্যতিক্রম করেছি। প্রতিবারের মতো শহরে ইফতার মাহফিল না করে আমরা ক্যাম্পাসে আয়োজন করেছি, যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনকে এক ছাদের নিচে আনতে পারি। কারণ গত ১৫ বছর এমন পরিস্থিতি ছিল না যে আজকের মতো সবাই এক ছাদের নিচে বসতে পারবে। এটা হল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ফসল। আপনারা জানেন বিগত ৩০ বছর ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি একটি কুচক্রী মহল তাদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। সাংবাদিক সমিতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তারা বিভিন্ন অপপ্রচার শুরু করেছে। আমি আশা করি আপনারা সবাই এসব বিষয়ে সচেতন থাকবেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বলেন, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমগুলো সঠিক ভূমিকা পালন করতে না পারার কারণে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছে।আমাদের দেশে একই ঘটনার সংবাদ বিভিন্নভাবে হয়, অনেক ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয় কিন্তু প্রকৃত সত্য তুলে ধরে খুব কম সাংবাদিক সংবাদ করেন। সাংবাদিকদের সকল প্রতিবেদন তথ্যমূলক, অনুসন্ধানমূলক হতে হবে, তাহলেই বাংলাদেশকে আপনারা সঠিক দিকে নিয়ে যেতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে চবিসাসের সাবেক-বর্তমান নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে চবি ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র মজলিস, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন।
এছাড়া চিটাগং ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, স্কুল অব ডিবেট, ডিবেটরস অফ সিইউ, ইনকিলাব মঞ্চ, আবৃত্তি মঞ্চ, আবৃত্তি সংসদ, এক্সিলেন্স বাংলাদেশ, বন্ধুসভা, তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ক্যারিয়ার ক্লাব, গ্রীন ভয়েস, হিস্ট্রি ক্লাব, ক্যাব গ্রুপ, ইনোভেশন হাব, পথের পাঁচালী, আইইআর ডিবেটিং ক্লাব, অনুধ্যান কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।