নিজস্ব প্রতিনিধি:
শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক তার বোনের নামে ঢাকার গুলশানে একটি ফ্ল্যাট হস্তান্তরের জন্য জাল সই ব্যবহার করেছিলেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্তকারীরা বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক অবৈধভাবে ওই ফ্ল্যাটটি অধিগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সন্তান এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের জন্য রাষ্ট্রীয় জমি বরাদ্দের বিষয়ে চলমান তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
তদন্ত অনুযায়ী, টিউলিপ তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর কাছে ফ্ল্যাটটি হস্তান্তর করেন, যাতে তিনি পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের আওতায় ১০ কাঠা (৭,২৬০ বর্গফুট) জমি পাওয়ার যোগ্য হতে পারেন। বাংলাদেশ সরকারের জমি বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী, এই প্রকল্পে আবেদনকারীর ঢাকায় কোনো জমি বা বাড়ি থাকা চলবে না।
দুদক আরও দাবি করেছে, ২০১৫ সাল থেকে টিউলিপ সিদ্দিক তার আয়কর নথিতে এই সম্পত্তির তথ্য গোপন রেখেছিলেন।
দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানান, গুলশানের ওই ফ্ল্যাটের মালিকানা থাকার কারণে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীও পূর্বাচলের প্লটের জন্য যোগ্য ছিলেন না।
‘নিয়ম এড়াতে রূপন্তী আনুষ্ঠানিকভাবে মালিকানা গ্রহণ না করেই ফ্ল্যাটের দখল নেন, যাতে তার প্লট বরাদ্দ প্রশ্নবিদ্ধ না হয়,’ বলেন দুদক চেয়ারম্যান।
দুদক এখন আনুষ্ঠানিকভাবে আদালতে এই অভিযোগ উত্থাপন করবে, যা বিচারিক অনুমোদনের পর মামলায় রূপ নেবে।
দুদক দাবি করেছে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে ৬০ কাঠা (৪৩,৫৬০ বর্গফুট) জমি অবৈধভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক তদন্ত চলছে, যার মধ্যে বেশ কিছু মামলায় টিউলিপ সিদ্দিকের নামও রয়েছে।
সবচেয়ে গুরুতর মামলাগুলোর একটি হলো রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তি থেকে প্রায় ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ। এতে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান ড. মোমেন বলেন, এটি বড় দুর্নীতির একটি খণ্ডচিত্র মাত্র। চলমান তদন্তে শেখ হাসিনা ও তার আত্মীয়দের আর্থিক অনিয়মের প্রকৃত মাত্রা উন্মোচিত হবে।
গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন বলে জানা যায়।
টিউলিপ সিদ্দিকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগও করা হয়নি এবং তিনি সম্পূর্ণভাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর