রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

টিউশনির সাথে সংশ্লিষ্ট হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ফেরেনি বাড়ি

শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫
টিউশনির সাথে সংশ্লিষ্ট হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ফেরেনি বাড়ি

মোহাম্মদ মুরাদ হোসেনঃ 

২৫ দিনের টানা ছুটিতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। তবে যারা এখনো ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন তাদের বড় একটি অংশ টিউশন সেবার সাথে সম্পৃক্ত। 

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে বন্ধ, সেখানে তাদের এখনো সরব উপস্থিতির কারণ কি? চারটি ঘটনা প্রবাহে তা জানিয়েছেন সময় জার্নালের হাবিপ্রবি প্রতিনিধি মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন।

ঘটনা প্রবাহ-১ঃ খাদ্যের বিনিময়ে টিউশনি -
বর্তমান সময়ে কথাটি অবাক লাগলেও রয়েছে সত্যতা। বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মতিয়ার (ছদ্মনাম) নামমাত্র সম্মানির পাশাপাশি খাদ্যের বিনিময়ে করান টিউশনি। কারণ হিসেবে রয়েছে পারিবারিক অস্বচ্ছলতা এবং নিজের শারীরিক অবস্থার স্থিতিশীলতা রক্ষা। 

ঘটনা প্রবাহ-২ঃ পারিবারকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান -  সাইদুল (ছদ্মনাম) নামের ২০ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী, পরিবারে বাবা-মা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ায় গত দুই বছর পরিবার থেকে টাকা পায়না। বরং নিজের খরচ (মাসিক প্রায় ৩০০০ টাকা) যোগানোর পাশাপাশি পরিবারকে খাদ্য ও চিকিৎসা জনিত (মাসিক ৩-৪ হাজার) একটি অর্থ প্রেরণ করতে হয় তাকে। এজন্য এক প্রকার মানসিক চাপে থাকেন তিনি। ফলে একাডেমিক ও ক্যারিয়ার সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছেন তিনি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল শিক্ষার্থী টিউশনির সাথে সম্পৃক্ত তাদের বেশিরভাগই পরিবার থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা পান না। ফলে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারকে সাপোর্ট দিতে হয়।

ঘটনা প্রবাহ-৩ঃ ভবিষ্যতের কথা ভেবে টিউশনি - রিহাদুল (ছদ্মনাম) নামের এক শিক্ষার্থী ৪ টা টিউশনি করান ভবিষ্যতের কথা ভেবে, যেন পরবর্তী সময়ে এই টাকা দিয়ে উন্নত জীবনযাপন কিংবা ব্যবসা করতে পারেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি একাধিক টিউশনির সাথে সম্পৃক্ত। 

ঘটনা প্রবাহ-৪ঃ  সজিব(ছদ্মনাম) নামের এক শিক্ষার্থী টিউশনি করান স্বাভাবিকের চেয়ে একটু ভালো থাকার জন্য। নিয়মিত মাছ, মাংস খাওয়ার পাশাপাশি রেস্তোরাঁয় যাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এরকম অসংখ্য শিক্ষার্থী রয়েছেন। এ ক্যাম্পাসের অনেকেই আছেন যারা ভালোমন্দ মিলিয়ে চলতে পারেন না। তাদের পোশাক পরিধি, খাদ্যাভ্যাসও ভিন্ন। তাদের অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতেই করান একাধিক টিউশনি।

এদিকে টিউশনির সাথে সংশ্লিষ্ট হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা বলেন, অনার্স পড়ুয়া প্রতিটি শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বল্প পরিমাণে হলেও টাকা আয়ের প্রবণতা থাকা দরকার। এতে পরিবারের চাপ কম থাকে। নিজের স্বাধীনতা অনুযায়ী খরচ করা কিংবা জমানো যায়।

তারা বলেছেন, ঈদে বাড়তি খরচ জোগাড় করতে এবং ঈদ পরবর্তীতে তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি এগিয়ে রাখতে আরো বেশ কিছুদিন অবস্থান করবেন ক্যাম্পাসে। 

তারা জানান, দিনাজপুরে টিউশনির সম্মানি যথেষ্ট কম, খাটুনি বেশি। এজন্য সর্বনিম্ন ২টি না করালে পরিশ্রম পুষিয়ে ওঠা যায়না। আর ঈদের সময় খরচপাতি বেশিই হয়। সেটা সামঞ্জস্য করতেই বন্ধের মধ্যেও টিউশনি করাচ্ছেন তারা।

তবে ক্যারিয়ারের ক্ষতি করে অতিরিক্ত টিউশনি না করতে পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষকেরা। আর অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলছেন যারা সত্যিকার অর্থে অর্থনৈতিক সমস্যায় আছে, তাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখা দরকার যেন ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে না যায়।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল