জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ি (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলাব্যাপী ভিজিএফ চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এরই অংশ হিসেবে ২১শে মার্চ (শুক্রবার) নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, কালীগঞ্জ ইউনিয়নের ৪,৭২৬টি পরিবারের মাঝে প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে মোট ৪৭.২৬ মেট্রিক টন চাল বিতরণের কথা ছিল। তবে চাল বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগে ২২শে মার্চ (শনিবার) নাগেশ্বরী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্তী একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা থেকে ৩,৮০০ কেজি চাল জব্দ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, উপকারভোগীদের ব্যক্তিগত নামে স্লিপ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে অন্যরা সেই স্লিপ ব্যবহার করে চাল উত্তোলন করছেন।
৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহজালাল জানান, “একজনের নামে স্লিপ ইস্যু করা হলেও অন্যজন সেই স্লিপ দিয়ে চাল উত্তোলন করছে।”
স্থানীয় লুৎফর রহমান অভিযোগ করেন, “স্লিপের ওপর সুবিধাভোগীর নাম উল্লেখ না থাকায় ব্যবসায়ীরা এগুলো কিনে নিয়ে চাল উত্তোলন করছেন।”
৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বেলাল অভিযোগ করেন, “চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তাদের পরিচিতদের মাধ্যমে চাল তুলে নিচ্ছেন, ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা চাল পাচ্ছেন না।”
এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার নুর কুতুবুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, “আপনারা যা করার করেন।” স্থানীয়দের অভিযোগ, তার দায়িত্বে অবহেলার কারণেই ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা অনিয়মের সুযোগ পেয়েছেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলায় মোট ৪,৬৯,৪৯৯টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে মোট ৪,৬৯৪.৯৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ জানান, জব্দকৃত চালের বিষয়ে নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের তৎপরতায় চাল জব্দ করা হলেও অনিয়মের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয়। উপকারভোগীদের স্বার্থ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
এমআই