নিজস্ব প্রতিবেক:
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে একজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের এম ফারারুজ্জামান বাধন, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের নূর-ই-আলম সিদ্দিকী এবং একই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রিজওয়ান তানভীর মীম। এ ছাড়া একই বিভাগের মো. সোয়াইব হোসেন ও মুরশিদা মেহেরিন হাসিকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
শাস্তি পাওয়া চার শিক্ষার্থীর মধ্যে মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়কে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, এম ফারারুজ্জামান বাধনকে দুই সেমিস্টারের জন্য, নূর-ই-আলম সিদ্দিকীকে দুই সেমিস্টারের জন্য এবং রিজওয়ান তানভীর মীমের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হওয়ায় তার সার্টিফিকেট ছয় মাসের জন্য অকার্যকর রাখা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২৮ নভেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয় অংশগ্রহণ করে ওই অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়ে অহেতুক সম্পৃক্ত হয়ে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে হুমকি-ধামকি এবং চড়-থাপ্পড় দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তার প্রেক্ষিতে ওই বছর ১ ডিসেম্বর অনুসারীদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে আক্রমণ করে মারাত্মক জখম করে। এতে ওই শিক্ষার্থীর চোয়ালের হাড় ভেঙে যায় এবং মাথায় ও গায়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেটে রক্তাক্ত হয়ে যায়। আক্রান্ত শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেও তাকে সেখানে ভর্তি নিতে বাধা দেওয়া হয় এবং পরবর্তী সময়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে জিম্মি করে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই শিক্ষার্থী পরবর্তীতে নগরের চন্দ্রিমা থানায় গেলে তার মামলা নিতেও নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হয়। শেষ পর্যন্ত আক্রান্ত শিক্ষার্থীর আত্মীয়-স্বজন এবং স্থানীয় ব্যক্তিদের অনুরোধে চন্দ্রিমা থানায় মামলা হয়। এ ঘটনায় সঙ্গে শাস্তি পাওয়া অপর শিক্ষার্থীরাও ছিলেন।
সিন্ডিকেট সূত্রে আরও জানা গেছে, মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়ের বিরুদ্ধে একজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে ফেসবুকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঘটনায় প্রক্টরকে ফেসবুকে হুমকিমূলক স্ট্যাটাস, চলতি বছর ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবরুদ্ধ করে দাবি-দাওয়া চাওয়া, শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজনৈতিক দলের ফরম নিতে বাধ্য করাসহ আরও বেশকিছু অভিযোগ আনা হয়েছে সিন্ডিকেটে। এসব কারণে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সভার সভাপতি প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা বলেন, ‘এসব ঘটনায় অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি হয়। পরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চন্দ্রিমা থানায় এ বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেন।