গোলাম আজম খান, কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার পৌরশহরের বদর মোকাম এলাকার বাসিন্দা আট মাস ধরে নিখোঁজ সৌদি প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা হাবিব উল্লাহ সন্ধান চান তার বৃদ্ধ মা-বাবা।
রোববার (৪ জুলাই ) দুপুরে আট মাস আগে নিখোঁজ হওয়ার সন্তানের ঘটনাটি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলতে গিয়ে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাকে জীবিত উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার পরিবার।
নিখোঁজ হাবিব উল্লাহ কক্সবাজার পৌরশহরের বদর মোকাম এলাকার বাসিন্দা হাজী আবদুল হকের ছেলে।
বিয়ের মাত্র দুই মাসের মাথায় স্বামীর এমন দুর্ঘটনায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন স্ত্রী রিপা মনি। মা-বাবাসহ স্বজনরা পাগলপ্রায়। তারা যেকোনো কিছুর বিনিময়ে হাবিব উল্লাহকে ফিরে পেতে চান। এ জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
নিখোঁজ হাবিব উল্লাহর মা রেহেনা বেগম জানিয়েছেন, তার ছেলে দীর্ঘ দিন ধরে সৌদি আরব থাকেন। সেখানে তার বাবার রেখে আসা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলেন হাবিব উল্লাহ। বিয়ে করে ২০ দিনের মাথায় আবারো সৌদি আরব চলে যান তিনি। পরে ছয় মাসের ছুটিতে গত বছরের ২১ অক্টোবর আবার দেশে আসেন। দেশে ফেরার মাত্র ১০ দিনের মাথায় নিখোঁজ হন হাবিব উল্লাহ।
হাবিব উল্লাহর স্ত্রী আফরিনা সুলতানা রিপা মনি বলেন, আমার হাতের মেহেদির রঙ না শুকাতেই স্বামীর এমন দুর্ঘটনা মেনে নিতে পারছি না। চোখে মুখে অন্ধকার দেখছি। মাথায় আসমান ভেঙে পড়ার অবস্থা। আমার একটি রাত যেন হাজার বছর। জীবিত, মৃত যেভাবেই হোক আমার স্বামীকে চাই।
হাবিব উল্লাহর বাবা হাজী আবদুল হক বলেন, ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর সকালে হাবিব উল্লাহর মোবাইল নম্বরে ফোন করে জরুরি কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় চট্টগ্রাম কর্ণফুলী থানার ঈসা নগরের বাসিন্দা নাসরিন আক্তার নামের একজন নারী। পূর্ব পরিচিত বিধায় হাবিব উল্লাহ কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে তার কাছে যান। কিন্তু আট মাসেও সে আর বাড়ি ফেরেনি। নাসরিন কেন ডাকলেন, এরপর কী হলো তা এখনো অজানা।
তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে সম্ভাব্য সব স্থান খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি। এতে নববিবাহিতা হাবিব উল্লাহর স্ত্রী, মা-বাবাসহ স্বজনরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
হাজী আবদুল হক আরও বলেন, ঘটনার সাথে নাসরিন আক্তার সরাসরি সম্পৃক্ত। কারণ তার বাড়িতে গিয়েই আর ফিরেনি। হয়তো কোনো অপহরণকারী চক্রের সাথে তার হাত থাকতে পারে। বোঝাপড়ায় হাবিব উল্লাহকে অপরাধীদের হাতে তুলে দিয়েছে। নাসরিন আক্তারের মোবাইল নম্বরের কললিস্ট বের করলে আসল রহস্য উদঘাটন হবে।
হাজী আবদুল হক বলেন, হাবিব উল্লাহর নামে দেশের কোনো থানায় মামলা, অভিযোগ, কিংবা সাধারণ ডায়েরিও নেই। হঠাৎ তার এমন ঘটনায় পাড়াপড়শিরাও হিসাব মেলাতে পারছে না। এ অবস্থায় দেশের কোথাও লাশের খবর পেলে, সেটি হাবিব উল্লাহ ভেবে ছুটে যান মা-বাবা ও স্বজনরা। দুশ্চিন্তায় ঘুম হয় না পরিবারের। তাই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত একটি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ প্রধান, র্যাব প্রধানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেছে হাবিব উল্লাহর পরিবার।
সময় জার্নাল/এসএ