নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। নানান আয়োজনে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলার নতুন বছর। আর প্রতি বছরের ন্যায় দিনটিকে বরণ করে নিতে এবারও আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই আনন্দ শোভাযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুত করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা বলয়। ফলে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে দ্বায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে ও শাহবাগ এলাকা ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলামোটর মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে যেন বাসসহ বড় যানবাহন শাহবাগের দিকে যেতে না পারে। নেভি গলির মুখে পুলিশের আরেকটি ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে যেন ছোট যানবাহনগুলোকেও শাহবাগের দিকে যেতে না পারে। এরপর থেকে শাহবাগ যাওয়া মানুষজনকে হেঁটেই আসতে হচ্ছে।
এদিকে পুরো শাহবাগ মোড় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে রাখতে দেখা যায় যেন কেউ শোভাযাত্রায় সামনে দিয়ে প্রবেশ করতে না পারেন। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবিসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। নানান আয়োজনে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলার নতুন বছর
ঢাকাবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন মো. নজরুল বলেন, ঢাকাবাসী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা যে ব্যাড়িকেড দিয়েছি সেগুলো তারা মেনে চলছেন। ডিএমপির পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনা মেনে তারা নববর্ষ পালন করতে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, পুরো রাজধানীর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে। ডিএমপির ১৮ হাজার ফোর্সের পাশাপাশি র্যাব, সেনাবাহিনীসহ আমাদের সাইবার ও ডিবি টিম কাজ করছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি। সবাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
এদিন সকাল থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতি ভেদাভেদ ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রঙিন পোশাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে এসে জড়ো হতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষের।
এদিকে পহেলা বৈশাখ ঘিরে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলে আগেই জানিয়েন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। একই সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপির ১৮ হাজার ফোর্স কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (১৩ এপ্রিল) তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, সিটিটিসি কাজ করছে। আমাদের কোনো ঝুঁকির কথা জানানো হয়নি।
জানা গেছে, এবারের শোভাযাত্রায় রয়েছে ২১টি মোটিফ। এর মধ্যে ৭টি বড়, ৭টি মাঝারি ও ৭টি ছোট মোটিফ। বড় মোটিফগুলোর মধ্যে রয়েছে কাঠের বাঘ, ইলিশ মাছ, টাইপোগ্রাফিতে ৩৬ জুলাই, শান্তির পায়রা, পালকি, জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধের পানির বোতল ইত্যাদি।
এছাড়াও ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবারের শোভাযাত্রায় বিশেষভাবে যুক্ত করা হয়েছে তরমুজের মোটিফ, যা সাম্প্রতিক সময়ের এক রাজনৈতিক বার্তাবাহী উপাদান। এছাড়াও সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, রঙিন চরকি, বাঘের মাথা, তালপাতার সেপাই, মাছ ধরার পলো, মাছ ধরার চাই, পাখা, মাথাল, ঘোড়া, লাঙলসহ রয়েছে নানান আয়োজন।
সময় জার্নাল/এলআর