আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইন নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কথা একাধিকবার টেনে এনেছেন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? আপনি ইউনূসের সঙ্গে গোপন মিটিং করুন, চুক্তি করুন। দেশের ভালো হলে খুশি হব। কিন্তু আপনাদের প্ল্যানিংটা কী? কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওখান থেকে লোক নিয়ে এসে দাঙ্গা করা?’
বুধবার (১৬ এপ্রিল) কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের এক সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব কথা বলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ভাষণের যে লাইভ দেখানো হয়েছে, সেখানেই এই প্রসঙ্গগুলো আছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের একটি পোস্ট প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কাল আমি এএনআই-এর একটি টুইট দেখেছি, হোম মিনিস্ট্রির সোর্স কোট করে বলেছে যে- ইসমে বাংলাদেশ কা হাথ হ্যায়।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের শেষ অংশের হিন্দি কথাটির অর্থ হলো, ‘এতে বাংলাদেশের হাত আছে।’
এর পরেই তিনি বলেন, যদি এই সহিংসতায় বাংলাদেশের হাত থাকে, তাহলে তার দায় তো কেন্দ্র সরকারের। সীমান্ত সামলানোর দায়িত্ব বিএসএফের। রাজ্যের হাত নেই এতে।
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতা এবং বিএসএফের দায় নিয়ে এই একই কথা ভাষণের শেষদিকে আরও একবার বলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘আপনারা অ্যালাউ করলেন কেন? বিজেপির লোক কীভাবে বাইরে থেকে এসে গণ্ডগোল পাকিয়ে পালিয়ে গেল।’
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ‘বিজেপির পরিকল্পনা’ বলে এদিনের ভাষণে একাধিকবার উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কথায়, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে পূর্ব পরিকল্পিত দাঙ্গা। আমিও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাচ্ছি।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাইরে থেকে গুণ্ডা নিয়ে আসার পরিকল্পনাটা বিজেপির। প্রথমে ওদের পরিকল্পনা ছিল রাম-নবমীর দিনের। কিন্তু আপনারা সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন।’
কলকাতার বৈঠকে হাজির ইমাম-মুয়াজ্জিনদের উদ্দেশ্য করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা শান্ত থাকুন। বিজেপির প্ররোচণায় পা দেবেন না। ইমামদের একটা ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি কিন্তু খুঁজে বার করব সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কাকে কাকে হাত করেছে এবং কিছু বাচ্চা ছেলেকে পাঁচ-ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ইঁট ছুঁড়িয়েছে।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বিএসএফ।
উল্লেখ্য, ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের সংশোধনি নিয়ে প্রথম দফায় গত মঙ্গল ও বুধবার এবং দ্বিতীয় দফায় শুক্র ও শনিবার বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী সুতি ও সামশেরগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়েছিল। ওই সহিংসতার জেরে শনিবার তিনজনের মৃ্ত্যু হয়েছিল – যাদের দুজন হিন্দু ও একজন মুসলমান বলে রাজ্য পুলিশ জানায়।
এমআই