বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

ট্রাম্পের 'চূড়ান্ত প্রস্তাব': শান্তির জন্য ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখল মেনে নিতে হবে

বুধবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৫
ট্রাম্পের 'চূড়ান্ত প্রস্তাব': শান্তির জন্য ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখল মেনে নিতে হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, ইউক্রেন বুধবার একটি খসড়া শান্তি চুক্তির বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে। ওই খসড়ায় ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি এবং ২০২২ সালের পর রাশিয়া দখল করা প্রায় সব অঞ্চল নিয়ে অনানুষ্ঠানিক রুশ নিয়ন্ত্রণ স্বীকার করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিষয়টির সাথে সরাসরি জড়িত সূত্রগুলো অ্যাক্সিওসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত সপ্তাহে প্যারিসে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের হাতে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের এক পৃষ্ঠার নথিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের 'চূড়ান্ত প্রস্তাব' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হোয়াইট হাউজের দাবি, দুই পক্ষ যদি শিগগিরই চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, তবে তারা আলোচনার টেবিল থেকে সরে যেতে প্রস্তুত।

ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বড় ধরনের ছাড় দিতে হবে। তবে এর আগে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে রাশিয়ার দখল মেনে নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়।


অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বর্তমান যুদ্ধরেখা স্থির রেখে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামোর অন্যান্য দিক যেমন, ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি পূর্বে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ইউক্রেন সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানায়, কিয়েভ এই প্রস্তাবকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট মনে করছে। তিনি বলেন, 'এই প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে রাশিয়া কী কী সুবিধা পাবে। কিন্তু ইউক্রেন কী পাবে, তা অস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।'

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী রাশিয়া যা পাবে

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে 'আইনগত স্বীকৃতি' এবং ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। প্রায় পুরো লুহানস্ক ও দখলকৃত দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার দখলদারিত্বকে 'কার্যত স্বীকৃতি' দেওয়া হবে।

এছাড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে পারবে, তবে ন্যাটোতে যোগ দেবে না।

এতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা হবে, বিশেষ করে জ্বালানি ও শিল্প খাতে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেন যা পাবে

প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনকে 'একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা' দেওয়া হবে, যা কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এবং ইউরোপের বাইরের কিছু দেশ নিয়ে গঠিত একটি অস্থায়ী গোষ্ঠীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। তবে নথিতে এই শান্তিরক্ষী মিশনের কার্যপ্রণালি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অংশগ্রহণের কথাও উল্লেখ নেই।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, খারকিভ অঞ্চলের যে ছোট অংশটি রাশিয়া দখল করে রেখেছে, সেটি ইউক্রেনের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

এছাড়া, দিনিপ্র নদী পথে বাধাহীন যাতায়াতের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এটি দক্ষিণ ইউক্রেনের কিছু অংশে ফ্রন্টলাইন বরাবর প্রবাহিত হয়েছে।

প্রস্তাবে ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার কথা বলা হয়েছে। তবে কোথা থেকে এই অর্থ আসবে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র [ইউরোপের সবচেয়ে বড়] ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এটি পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় দেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে।

নথিতে ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র খনিজ চুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে, যা বৃহস্পতিবার ট্রাম্প স্বাক্ষর করবেন বলে জানিয়েছেন।

পরিকল্পনা উপস্থাপনের পর পুতিন রুশ আগ্রাসন বন্ধ করার প্রস্তাব দিলেও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা এতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এই সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে চতুর্থ বৈঠকের জন্য মস্কো যাবেন, এমনটি হোয়াইট হাউজ মঙ্গলবার জানিয়েছে।

তবে উইটকফ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বুধবার লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন না। এর পরিবর্তে, ইউক্রেনের প্রতিনিধি কিথ কেলোগ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দেবেন। আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, 'যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে' রুবিও এবং উইটকফ একসাথে কাজ করছেন।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনীয়দের কাছ থেকে এমন সংকেত পাওয়া গেছে যে তারা বুধবারের লন্ডন বৈঠকে ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা না নিয়ে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে চান।

একজন কর্মকর্তা বলেন, 'ফয়সালা হয়েছে যে সেক্রেটারি লন্ডনে যাবেন না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল যুক্তরাজ্য এবং ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে।' 

রুবিও টুইট করেছেন, তিনি যুক্তরাজ্যের সহকর্মীর সঙ্গে একটি 'ফলপ্রসূ' আলোচনা করেছেন এবং লন্ডনে আলোচনা শেষে 'ফলোআপ' করতে আগ্রহী।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, 'আলোচনা চলছে এবং আশা করা হচ্ছে যে আমরা সঠিক দিকে এগোচ্ছি।'


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল