এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেই প্রধান অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেনের বিরুদ্ধে নানাবিধ দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাট সহকারী পরিচালক দুদক, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা সিভিল সার্জন-এর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। নিজ এলাকায় চাকুরী করার সুবাধে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ বিগত সরকারের আমলে প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে গোটা হাসপাতালে অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে গড়ে তুলেছেন। নামে বেনামে হয়েছেন অনেক সম্পাদের মালিক। নিজের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা বলে এর প্রভাব খাটিয়েছে হাসপাতালে। এমনকি নিজের নির্মাণাধীন পাকা ভবনের রাজমিস্ত্রীর কাজের টাকা পরিশোধ করেনি এ রকম অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরকার পরিবর্তনের পর বিগত দিনের তার অনিয়মের মুখ খুলতে শুরু করেছে ভূক্তভোগীরা। এ সংক্রান্তে বিভিন্ন পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। সেই অফিস সহকারী মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেন এখনও বহাল তবিয়তে কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে রয়েছেন এ কর্মস্থালে। হাসপাতালের কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন সুরহা পাইনি বলে অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের।
অবশেষে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে বাগেরহাট সহকারী পরিচালক দুদক, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও জেলা সিভিল সার্জন-এর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে শুভংকর শিকদার।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলা সদর ইউনিয়নের কাঠালতলা গ্রামের দুলাল চন্দ্র শিকদারের স্ত্রী মৃত্যু: মিনা রানী ঠাকুর মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের একজন সিনিয়ার নার্স হিসেবে কর্মরত থেকে ২০২০ সালের ১৪ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনায় একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরন করেন। পরবর্তীতে তার নামীয় পেনশন, জিপিএ ফান্ড, জনকল্যাণ, কল্যাণ তহাবিল, সৎকার কাজে জেলা প্রশাসক থেকে আর্থিক সহায়তা এ সংক্রান্ত কাগজপত্র ঠিক ঠাক করে দেওয়ার জন্য মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেন কে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার চুক্তি করে সেই অনুযায়ী মিনা রানী ঠাকুরের ছেলে পেনশনের ২৭ লক্ষ টাকা তুলে সেখান থেকে তাকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করেন।
পরে হিসার রক্ষক তার কথা অনুযায়ী কাজ না করে বাকি কাজ সম্পূর্ন করার জন্য পুনরায় টাকা দাবি করেন এবং বিভিন্ন দপ্তরের কথা বলে বিভিন্ন সময় নার্স মিনা রানী ঠাকুরের ছেলে শুভংকর শিকদার এর কাছ থেকে আরও ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ছাড়াও অফিস সহকারী তার ব্যাক্তিগত জমি ক্রয়ের কথা বলে শুভংকর শিকদারের নিকট থেকে ধার সরুপ ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিলেও বাকী টাকা না দিয়ে বছরের পর বছর ঘুড়িয়ে তারবাহানা করে আসছেন।
এ ঘটনায় শুভংকর শিকদার মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম এর কাছে গত ৫ ফেব্রয়ারী একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও কর্মকর্তা ২/৩ মাস ঘুরিয়ে কোন সমাধান দিতে পারেনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, তিনি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি।
এ সম্পর্কে বাগেরহাট জেলা দুদক সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, মোরেলগঞ্জ হাসাপাতালের অফিস সহকারী মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, সত্ততা পেলে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মাহাবুবুল আলম বলেন, মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মাতুব্বর মো. রেজোয়ান হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আগামী সপ্তাহে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমআই