নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম জাতীয় বাজেটের আকার কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার চেয়ে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কম।
এর মধ্য দিয়ে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছর থেকে চলা বাজেটের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির ধারা প্রথমবারের মতো ভেঙে গেল।
জিডিপির তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটের আকার এবার ১২ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা গত ১৫ বছরে সবচেয়ে কম। এর আগে সর্বশেষ এত কম অনুপাত দেখা গিয়েছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে, তখন অনুপাত ছিল ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য আগের আওয়ামী লীগ সরকার সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার একটি প্রাথমিক বাজেট নির্ধারণ করেছিল।
আজ সোমবার (২ জুন) দুপুরে আগে থেকে রেকর্ড করে রাখা একটি বক্তৃতার মাধ্যমে বাজেট ঘোষণা করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাজেটের এই কাটছাঁট রাজস্ব একীভূতকরণ কৌশলের অংশ, যা বাস্তবায়নযোগ্য এবং আরও দক্ষ আর্থিক পরিকল্পনা নিশ্চিত করবে।
নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার চেয়ে কম। এই ঘাটতি জিডিপির ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে সরকার বিদেশি ঋণ, ব্যাংক ঋণ ও সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সরকার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত ৫ দশমিক ২৫ শতাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি। তবে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবি-সহ আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্বাভাস, প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নিচে থাকতে পারে।
সাধারণভাবে প্রতি বছর বাজেটের আকার আগের বছরের তুলনায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। গত বছর এই বৃদ্ধি ছিল ৮ শতাংশেরও কম।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট অনুমোদন হয়েছে।
এটি দেশের ৫৪তম জাতীয় বাজেট এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথম বাজেট।
এমআই