মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন:
নতুন ভিসি আসেন, আশা দেখান, বাস্তবায়নের অনেক আগেই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান। আশা নিরাশায় রুপান্তরিত হয়। বলছি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কথা।
২০১০ সালে সমাবর্তনের পর একযুগ পার হয়েছে। তবুও আরেকটি সমাবর্তন আয়োজন করতে পারেনি পরবর্তী কোনো প্রশাসন। ওই সমাবর্তনে ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করা ৯ জন পিএইচডি, ৭৯ জন মাস্টার্স এবং ৭৩০ জনকে ব্যাচেলর ডিগ্রির সনদ প্রদান করা। এরপর হুহু করে বেড়েই চলেছে গ্রাজুয়েটের সংখ্যা।
পূর্বে প্রশাসনের ইচ্ছা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতা, রাজনৈতিক চাপের কারণে বারবার সিদ্ধান্তহীনতায় সমাবর্তনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন তারা।
একজন প্রাক্তন ছাত্রী বলেন, “আমরা শুধু জানতে চাই, আমাদের ব্যাচ কি কোনোদিন সমাবর্তনের মঞ্চে দাঁড়াতে পারবে? নাকি আমাদের স্বপ্নগুলো কেবল কথার ফুলঝুড়িতেই হারিয়ে যাবে?”
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ৫৩ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ২য় সমাবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। করোনা মহামারীতে তা আর বাস্তবে রুপ নিতে পারেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের আগেই ২য় সমাবর্তন আয়োজন করা হবে। সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনাগ্রহের কারণে আয়োজনের পথ রহিত হয়।
পরবর্তীতে বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. এনামউল্ল্যা'র নিকট সমাবর্তনের দাবি তুলে ধরেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। সেখানে এক প্রকার আশার বাণী শোনা যায়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হাবিপ্রবির আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন, 'বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, হাবিপ্রবি ৫ আগষ্টের পর যতবার মাননীয় উপাচার্য মহোদয় স্যারের সাথে মিটিং করেছি সেখানে ১ম যে বিষয় টা আমরা তুলে ধরি সেটা হচ্ছে সমাবর্তন। তারই ধারাবাহিকতায় ভিসি স্যার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন এবং নভেম্বরে হাবিপ্রবি ২য় সমাবর্তন আয়োজন করার জন্য চেষ্টা চলমান। আমরা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন হাবিপ্রবি এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে যেখানে কাজ করা দরকার সেখানে সেখানে বলতেছি। ভিসি স্যার ও এ ব্যাপারে পজিটিভ। আমরা আশাবাদী খুব শিগগিরই হাবিপ্রবির ২য় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে।
উদ্যোগ, সদিচ্ছা আর বাস্তব পদক্ষেপ—এই ত্রয়ীর সমন্বয় ছাড়া সমাবর্তন শুধুই থেকে যাবে এক প্রজন্মের অপূর্ণ অধ্যায় এমনটাই বলছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
এমআই