সময় জার্নাল প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার না কমলে সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে শয্যা সঙ্কট আরও তীব্র হবে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সারা দেশে পাঁচ হাজার সাধারণ শয্যা ও তিনশ আইসিইউ বেড খালি থাকার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সংক্রমণ বাড়তে থাকলে এই শয্যাগুলোর একটিও খালি থাকবে না।
রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র লাইন ডিরেক্টর রোবেদ আমিন ভার্চুয়াল বুলেটিনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘যে হারে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিন পর হাসপাতালে শয্যা আর খালি থাকবে না।’
দেশের নানা প্রান্তে করোনা আক্রান্ত রোগীরা খুব বেশি ঝুঁকিতে না থাকলে তাদের উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।
রোবেদ আমিন বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঢাকা বা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চলে আসার প্রবণতা বেশি। কিন্তু ঢাকাতে করোনা যে চিকিৎসা পদ্ধতি, সেই একই পদ্ধতি কিন্তু জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে। আমরা একটি গাইডলাইন তৈরি করে সে মোতাবেক রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছি। খালি একটু খেয়াল করতে হবে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোথায় শয্যা খালি আছে।’
তবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের ১৫ লিটারের বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন তাদের ঢাকায় আসতে হবে বলেও জানান তিনি।
রোবেদ আমিন বলেন, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ১-৫ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানোলা বা ফেইস মাস্কের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব। এর বেশি কিন্তু ১৫ লিটারের কম অক্সিজেন দিতে নন-রিব্রিদার মাস্কের মাধ্যমে তা দেওয়া যাবে।
তিনি জানান, যাদের ১৫ লিটারের বেশি অক্সিজেন প্রয়োজন তাদের জন্য হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা একমাত্র পদ্ধতি নয়। নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন পদ্ধতিতে (সিপ্যাপ, বাইপ্যাপ) তাদের অক্সিজেন সরবরাহ করতে হবে।
রোবেদ আমিন বলেন, ‘তবে এই পদ্ধতিতে যারা অক্সিজেন নিচ্ছেন, তাদের ফুসফুস ও হার্টের ড্যামেজ ও স্ট্রোক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
সারা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তাদের আশি শতাংশের বয়স পঞ্চাশের বেশি। তারা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ কমরবিডিটিতে ভুগছেন। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ৫৮ এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ১১ দশমিক ৬৪। ডেল্টা ভেরিয়েন্টের জন্য মৃত্যুর হার বাড়ছে বলে জানান রোবেদ আমিন।
দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
রোবেদ আমিন বলেন, ‘সংক্রমণের হার কমাতে টিকার ভূমিকা অপরিসীম। টিকা আসা শুরু করলে সবাইকে সঠিকভাবে নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হবে। আমরা টিকাদানের ক্ষেত্রে আগে বয়স্ক রোগীদের প্রাধান্য দিচ্ছি। তাই অনেকের এসএমএস পেতে দেরি হচ্ছে। যাদের এসএমএস আসছে না তাদের বলব, একটু ধৈর্য্য ধরুন। এসএসএস পাবেন।’
চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে বিনা কারণে বেরিয়ে আসছেন, তাদের সতর্ক করে দিয়ে ঘরে থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
সময় জার্নাল/এসএ