শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হলেও পালিত হয়নি ’শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস’

শুক্রবার, জুলাই ১৮, ২০২৫
সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হলেও পালিত হয়নি  ’শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস’

মো. মিরাজুল ইসলাম, খুবি প্রতিনিধি: 

২৪’ এর ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) একমাত্র শহীদ মীর মাহাফুজুর রহমান মুগ্ধ। অভ্যূত্থান পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায়  স্বীকৃতি পেলেও  ১৮ জুলাই দিনটিকে ’শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস’ নামে পালিত হয়নি । 

আজ ১৮ জুলাই (শুক্রবার) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সাংবাদিক লিয়াকত আলী অডিটোরিয়ামে  জুলাই গণঅভ্যূত্থান ও শহীদ মীর মুগ্ধ স্বরণসভা এবং মুগ্ধসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মসজিদে দোয়া ও মন্দিরে প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বরণসভায় মীর মুগ্ধর পরিবারের কোনো সদস্যও উপস্থিত ছিলেন না। 

এছাড়াও খোজ নিয়ে জানা যায়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গত ১৬ জুলাই পালিত হয়েছে শহীদ আবু সাঈদের শাহাদত বার্ষিকী ও ‘জুলাই শহীদ দিবস’। সেখানে অংশ নিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা। তারা হলেন— আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান । 

এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “একদিকে ১৮ জুলাই ‘শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস’ কে হাইলাইট করে কর্মসূচিগুলো হয়নি, অন্যদিকে মুগ্ধ ভাইয়ের শহীদ হওয়ার দিনেও কোনো জাতীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়নি।”

গতবছরের ০৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো মীর মুগ্ধ-এর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (তৎকালীন প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ছিলেন) প্রফেসর  ড. মোঃ রেজাউল করিম। এ সভায় উপস্থিত থেকে শহিদ মীর মুগ্ধ’র বড় ভাই মীর মাহমুদুর রহমান দীপ্ত ও জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করেন। 

ওই সভায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- (১) ১৮ জুলাই শহিদ মীর মুগ্ধ দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও যথাযথ মর্যাদায় পালন করা, (২) মেইন গেটের নাম শহিদ মীর মুগ্ধ তোরণ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া, (৩) টিএসসির সামনে শহিদ মীর মুগ্ধ’র স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ও স্মৃতিফলক নির্মাণ, (৪) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে রাষ্ট্রের কাছে শহিদ মীর মুগ্ধ হত্যার বিচার চেয়ে আবেদন, (৫) এই আন্দোলনে সকল শহিদের স্মরণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে জুলাই গণহত্যা নামে একটি স্মৃতি কর্নার করা।

এ সভায় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ন্যায্য বলে স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তিনি স্থায়ী উপাচার্য নিযুক্ত হলে দাবিগুলো পূরণের উদ্যোগ নেন। যার ফলশ্রুতিতে গত ০৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের নাম ‘শহিদ মীর মুগ্ধ তোরণ’ করা হয় এবং ২০২৪ সালের ০৮ সেপ্টেম্বর মীর মুগ্ধ’র স্মরণ সভায় শিক্ষার্থীরা যে দাবিগুলো করেছিল, তা সিন্ডিকেটের ২৩০তম সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান। ফলে প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৮ জুলাই ‘শহিদ মীর মুগ্ধ দিবস’ পালন করার কথাও বিভিন্ন মিডিয়ার কাছে জানান তিনি। 

তবে, শহীদ মীর মুগ্ধ স্বরণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানান উদ্যোগ বাস্তবায়ন করলেও মেইন গেটের নাম ’শহিদ মীর মুগ্ধ তোরণ’ উদ্বোধন ব্যতীত অন্য দাবির বাস্তবায়ন দৃশ্যমান হয়নি শিক্ষার্থীদের কাছে।

শহীদ মীর মুগ্ধ দিবস পালন করা হয়েছে কিনা এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাত বলেন,  ১৮ জুলাই শহীদ মীর মুগ্ধ শহীদ দিবস পালন করা হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ মীর মুগ্ধ স্বরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  মসজিদ ও মন্দিরে প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  ৫ দাবির অন্যান্য দাবিগুলোও পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।”

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল