শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

আল-জাজিরার

বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর সরাসরি নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা

বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৪, ২০২৫
বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর সরাসরি নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

২০২৪ সালে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানোর সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী ইউনিট তাদের হাতে আসা গোপন ফোন কলের রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

১৮ জুলাই রেকর্ড করা এক ফোন কলে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, আমার নির্দেশ এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। আমি পুরোপুরি খোলা নির্দেশ দিয়েছি। এখন তারা মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানেই পাবে, গুলি করবে।

পরে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র এবং হাসিনার আত্মীয় শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ফোনালাপে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টার ব্যবহারের বিষয়ে কথা বলেন। তাকে বলতে শোনা যায়, যেখানেই তারা কোনো সমাবেশ দেখতে পায়, তা ওপর থেকে- এখন এটি ওপর থেকে করা হচ্ছে - এটি এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় শুরু হয়েছে। এটি শুরু হয়েছে। কিছু (প্রতিবাদকারী) সরে গেছে।

সেই সময় বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর আকাশ থেকে গুলি চালানোর কথা অস্বীকার করেছিল। কিন্তু ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্ঘটনা ও জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাবির শরীফ আল জাজিরার আই-ইউনিটকে বলেন, আমাদের হাসপাতালের প্রবেশপথ লক্ষ্য করে একটি হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থীর শরীরে অস্বাভাবিক ধরনের গুলি বিদ্ধের চিহ্ন পাওয়া যায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসটি) জানায়, শেখ হাসিনার সরকারের দমন-পীড়নে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত এবং ২০ হাজার আহত হয়েছেন।

হাসিনার নজরদারি নেটওয়ার্ক এনটিএমসি এই কথোপকথনগুলো রেকর্ড করেছে। এনটিএমসি'র বিরুদ্ধে আগে কেবল বিরোধীদলের ব্যক্তিদের ওপরই নয়, এমনকি হাসিনার রাজনৈতিক মিত্রদের ওপরও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে।

১৬ জুলাই রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। এটি আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়। পরে হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ফোনে সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে পুলিশের আইজিপিকে চাপ দিতে শোনা যায়।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজীবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আমাকে পাঁচবার প্রতিবেদন বদলাতে বাধ্য করা হয়েছে। তারা চেয়েছে লেখা হোক যে ‘পাথর নিক্ষেপে’ মৃত্যু হয়েছে, যদিও তিনি পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছেন।

সাঈদের মৃত্যুর ১২ দিন পর তার পরিবারকে ঢাকায় বিমানে পাঠানো হয়েছিল হাসিনার সঙ্গে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য। সেখানে মোট ৪০টি পরিবার জড়ো হয়েছিল- তাদের সবারই আত্মীয়স্বজন বিক্ষোভে নিহত হয়েছিল।

নিহত সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, আমাদের জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। না গেলে হয়তো আরও খারাপ কিছু ঘটতো। ক্যামেরায় ঘটনাটি রেকর্ড করার সঙ্গে সঙ্গে হাসিনা প্রতিটি পরিবারকে টাকা তুলে দেন। তিনি সাঈদের বোন সুমি খাতুনকে বলেন, আমরা তোমার পরিবারকে ন্যায়বিচার প্রদান করবো। সুমি প্রধানমন্ত্রীকে উত্তর দেন, ভিডিওতে দেখানো হয়েছে যে, পুলিশ তাকে গুলি করেছে। এখানে তদন্ত করার কী আছে? এখানে আসাটা ভুল ছিল।

আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের একজন মুখপাত্র বলেন, হাসিনা কখনো ‘মারাত্মক অস্ত্র’ শব্দটি ব্যবহার করেননি এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে অনুমোদন দেননি। তিনি বলেন, এই (হাসিনার ফোনের) রেকর্ডিংটি কোনো নির্দিষ্ট অংশ বেছে নেওয়া, বিকৃত বা উভয়ই।

সূত্র: আল জাজিরা


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল