রুহুল সরকার, রাজীবপুর: প্রায় ২ বছর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেড়েছে হতাশা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হতাশা থেকে কেউ কেউ ভার্চুয়াল অপরাধ সহ নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে, হচ্ছে নৈতিক অবক্ষয়।
প্রাথমিক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সহ বিভিন্ন বয়সী এসব শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাজীবপুর থানার পুলিশের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং এবং মোটিভেশনাল স্পিচ দেয়া হচ্ছে।
গত কয়েক দিন থেকে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠে বিকেলে আগত কিশোর ও তরুণদের একত্রিত করে রাজীবপুর থানা পুলিশের একটি দল মুঠোফোন আসক্তি, ইভটিজিং, মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ,অনলাইনে বিভিন্ন গেমস এবং পর্ণোগ্রাফির কুফল সম্পর্কে আলোচনা করে এবং এগুলোর ক্ষতিকর দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে।
তরুনদের নিয়ে পুলিশের এই ব্যতিক্রম উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন উপজেলার শিক্ষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সচেতন মানুষ।
রাজীবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহিদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কারও মনে হতাশ আবার কারও ক্ষোভ জমেছে। এতে তারা মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ হয় এবং মনের ভিতর খারাপ চিন্তা আসে। বিভিন্ন খেলার মাঠে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা যে ভাবে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নানা সচেতনতা মূলক উপদেশ দিচ্ছে এটি সত্যি প্রশংসনীয়। এই কার্যক্রম ধারাবাহিক ভাবে চালানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।
রাজীবপুর উপজেলার সবুজবাগ গ্রামের মামুন ইসলাম বলেন, গত কাল বিকেলে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে আমরা কয়েক জন বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলাম। এসময় হঠাৎ কয়েকজন পুলিশ অফিসার আসে। প্রথমে আমরা ভয় পেয়েছিলাম পরে আমাদের সবাইকে ডেকে নিয়ে মাদক, ইভটিজিং, সাইবার ক্রাইম, অনলাইনে জুয়াসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর বিষয়ের কুফল নিয়ে আলোচনা করে এবং এগুলো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়। ভালোভাবে পড়াশোনা করে পরিবার, দেশ ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখার জন্য আমাদের সকলকে উদ্বুদ্ধ করে পুলিশ সদস্যরা ।
রাজীবপুর উপজেলার রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সদস্য সচিব শিপন মাহমুদ বলেন, এলাকার তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য চমৎকার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজীবপুর থানা পুলিশ।এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করলে এর সুফল আসবে বলে তার ধারণা।
তরুণদের নিয়ে ব্যতিক্রম এই আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নাজমুল আলম জানান, এই আইডিয়া প্রথমে আমার মাথায় আসে পরে সহকর্মীদের সাথে কথা বললে তারাও রাজি হয়। পরে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাঠে টহলের সময় তরুণদের একত্রিত করে আমরা মোটিভেশান স্পিচ এবং কাউন্সিলিং এর বিষয়ে কথা বলি। আশা করছি এতে সুফল আসবে এবং তরুণরা পড়াশোনা এবং ভালো কাজে আগ্রহী হবে।
সময় জার্নাল/এমআই