বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রসূতির পেটে গজ-প্যাড রেখে সেলাই করার অভিযোগ

বুধবার, আগস্ট ২০, ২০২৫
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রসূতির পেটে গজ-প্যাড রেখে সেলাই করার অভিযোগ

জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁও আড়াই শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচারকালে এক প্রসূতির পেটে গজ-প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) রেখে সেলাই করে রিলিজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নার্স ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে ঠাকুরগাঁও আড়াই শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকার মো: আবুজর গিফারীর স্ত্রী।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গেল মাসের ২৫ জুলাই মধ্যরাতে সাথী আক্তারের লিভারে ব্যথা ওঠার কারণে তার স্বামী আবুজর গিফারী ভোররাতে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করান। তার কিছুক্ষণ পর স্বাভাবিক ডেলিভারির মাধ্যমে সাথী আক্তার সন্তান প্রসব করেন। এই সময় সাথী আক্তারের এক সাইডে অস্ত্রোপচার করা হয়।

অস্ত্রোপচার শেষে নার্সরা ভিতরে গজ ও একটি প্যাড রেখে সেলাই করে দেন। পরদিন জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের উপস্থিতিতে সাথী আক্তারকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর গত ১৭ আগস্ট রোগীর প্রচণ্ড ব্যথা উঠলে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেড রেস্ট দেন। পরে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে ডাক্তার ডাকতে নার্সদের বলা হলে তারা ডাক্তার ডাকতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, এখন ডাক্তারের রাউন্ড শেষ হয়ে গেছে তাই ডাক্তার আর কোনো রোগী দেখবেন না। পরদিন ডাক্তার আসলে তখন দেখানো হবে।

এ সময় কর্তব্যরত নার্সরা বলে ওঠেন, রোগীর বেশি সমস্যা হলে বাইরে প্রাইভেটভাবে চিকিৎসা করান। এরপর রোগীর স্বজনরা ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে নিয়ে গেলে তিনি অবজারভেশন করেন এবং রোগীর প্রস্রাবের রাস্তা থেকে একটি সম্পূর্ণ প্যাড (স্যানিটারি ন্যাপকিন) বের করেন।

এ বিষয়ে রোগীর স্বামী আবুজর গিফারী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল আমার স্ত্রী ব্যথা অনুভব করলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানকার নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে ভালো সেবা না পেয়ে ডা. জিন্নাত পারভীনের কাছে যাই। তিনি আমার স্ত্রীকে ভালোভাবে চেকআপ করে গজ ও একটি প্যাড বের করেন। এটা যদি আরও কিছুদিন ভিতরে থাকত তাহলে আমার স্ত্রীকে বাঁচানো যেত না।

তিনি আরও বলেন, ডা. আইরিশ রহমান কীভাবে একজন রোগীকে ভালোভাবে না দেখে রিলিজ দিলেন? অবশ্যই তার গাফিলতি রয়েছে। আর আগেও এই চিকিৎসকের নামে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তারপরেও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। শুধু চিকিৎসক নন, হাসপাতালের নার্সদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ রয়েছে, তারা ঠিকমতো রোগীদের সেবা করেন না। আমি ওই চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আশা করি তত্ত্বাবধায়ক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

তবে এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিশ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ ফিরোজ জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল