আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ধারাবাহিক হামলায় বৃহস্পতিবার অন্তত ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।এর মধ্যে অন্তত ৯ জন ছিলেন খাদ্যসাহায্য নিতে আসা মানুষ। একই সঙ্গে অনাহারে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে এক ড্রোন হামলায় একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় গাজার সালাহউদ্দিন সড়কের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গোলাবর্ষণে পাঁচজন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়। নেটজারিম করিডর এলাকায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় এক ব্যক্তিও নিহত হন।
গাজা সিটির আল-তুফাহ পাড়ায় আল-জারকা এলাকায় ড্রোন হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অনেকে গুরুতর আহত হন। শহরের সাবরা এলাকায় একাধিক হামলায় কমপক্ষে ১২ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। শহরের উত্তর-পশ্চিমের আল-শান্তি এলাকায় একটি পরিবারকে লক্ষ্য করে হামলায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়।
উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ড্রোন হামলায় চারজন নিহত হন। একই এলাকায় আল-নাজলা জেলায় আরও দুইজন নিহত হন। সাবরা এলাকার আল-ইস্তিজাবা মসজিদের কাছে হামলায় প্রাণ হারান তিনজন। শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় একজন নিহত হন, আরেক হামলায় শিশু কন্যা নিহত ও তার মা আহত হন।
দক্ষিণের রাফাহতে ত্রাণকেন্দ্রের কাছে বোমাবর্ষণে তিনজন নিহত হন। নাসের হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরও অনেকে আহত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় গাজার ওয়াদি গাজা এলাকায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা জনগণের ওপর হামলায় সাতজন নিহত ও অন্তত ১৮ জন আহত হন।
এদিকে গাজা সিটির জেইতুন ও সাবরা এলাকায় ধ্বংসযজ্ঞ ও গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও দুই ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অনাহার-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭১ জনে, যাদের মধ্যে ১১২ শিশু।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ১০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পুরো উপত্যকা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং মারাত্মক দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।
গত নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতেও (আইসিজে) বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্র: আনাদোলু
একে