সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য হুমকি: অধ্যাপক ড. হাশেম

সোমবার, আগস্ট ২৫, ২০২৫
কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য হুমকি: অধ্যাপক ড. হাশেম

বাকৃবি প্রতিনিধি:

অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিকে কেন্দ্র করে প্রায় এক মাস ধরে অচল হয়ে আছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদ। ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন, অনুষদ ও প্রশাসনিক ভবনে তালাবদ্ধকরণ থেকে শুরু করে রেললাইন অবরোধের মতো কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে স্থবির করে ফেলেছে। পশুপালন অনুষদে কম্বাইন্ড ডিগ্রি ইস্যু ঘিরে চলমান অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশুপালন অনুষদের শিক্ষকরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেন বাকৃবির পশুপালন অনুষদের শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ার সময় যে ডিগ্রি সম্পর্কে অবগত ছিলেন, সেটিকে পরিবর্তন বা একীভূত করার দাবি সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন পরিপন্থী ও নজিরবিহীন। অথচ তারা শ্রেণীকক্ষ ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত করছেন। গত ৯ আগস্ট নবীনবরণ অনুষ্ঠান জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিও নষ্ট করা হয়েছে।

শিক্ষকরা বলেন, কম্বাইন্ড ডিগ্রি মূলত ফ্যাসিবাদ আমলে চক্রান্তমূলকভাবে চালু হয়েছিল। সেখানে ৭০-৭৫ শতাংশ চিকিৎসা বিষয়ক কোর্স এবং মাত্র ২৫-৩০ শতাংশ পশু ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কোর্স অন্তর্ভুক্ত থাকায় দক্ষ গ্রাজুয়েট তৈরি সম্ভব নয়। এতে দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন মন্থর হয়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে চেয়ে যে ভোটের আয়োজন করে, সেটিতেও জোরপূর্বক প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন কিছু শিক্ষার্থী। এছাড়া ভেটেরিনারি অনুষদের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ভোটে অংশগ্রহণ করলেও পশুপালন অনুষদের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটদানের সুযোগ প্রদান না করা তীব্র নিন্দা জানান শিক্ষকবৃন্দ।

পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো রুহুল আমিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী ১৫ দিন ক্লাস না করলে ভর্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যায়। যেহেতু প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনো পর্যন্ত ক্লাসে আসেনি। বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে। আমরা চাই, দ্রুত তদন্ত কমিটি করে কারা আন্দোলনে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাশেম বলেন, শিক্ষার্থীরা শুধু নিজেদের চাকরির বিষয়টি ভাবছে, কিন্তু শিক্ষকেরা জাতীয় স্বার্থে চিন্তা করেন। ভোটের মাধ্যমে শতভাগ শিক্ষার্থীও যদি কম্বাইন্ডের পক্ষে ভোট দেয়, তবুও এটি গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা কেবল স্নাতক অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই এই সেক্টরের অংশীদার নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তারা যথেষ্ট প্রাজ্ঞ নয় বলে আমরা মনে করি। প্রাণীসম্পদ সেক্টরে আরও অংশীজন আছে, তাদের মতামত নেয়া প্রয়োজন ছিল। এছাড়া সদ্য ভর্তি হওয়া স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটদানের তুলনায় স্নাতক পঞ্চম বর্ষ বা এমএস (মাস্টার্স) শিক্ষার্থীদের ভোটদানের সুযোগ দেয়া অধিকতর যুক্তিযুক্ত ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অনুষদের গ্রাজুয়েটরা বেকার নন। তারা ইতোমধ্যে প্রাইভেট সেক্টর, পোল্ট্রি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস) এবং ডেইরি সেক্টরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যদি ডিএলএস বা মন্ত্রণালয় জোর করে কম্বাইন্ড ডিগ্রি বাস্তবায়নের চেষ্টা করে, তা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করা হলে আমরা বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নেব।

অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষির পরবর্তী ধাপ হলো শিল্প। জাতীয় উন্নয়নের জন্য লাইভস্টক সেক্টরে অধিক উৎপাদনমুখী শিল্পায়নের কোনো বিকল্প নেই।

সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. সামছুল আলম ভূঞা, অধ্যাপক ড. মো রুহুল আমিন, অধ্যাপক ড. মোখলেছুর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মামুন, অধ্যাপক ড. মো শওকত আলী, অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্যাসহ পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল