দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ: এক সময় শুকনো মৌসুম চৈত্র-বৈশাখ মাসেও নৌকায় করে যেতে হতো যে গ্রামটিতে এখন সেই গ্রামের মানুষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে দেওয়া সপ্নের রাস্তা পেয়ে মহা খুশি।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বেলেডাঙ্গা গ্রাম উপজেলার একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল। টুঙ্গিপাড়া হতে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের এ গ্রামটি। চারিদিকে শুধুই পানি। তার মধ্যে দ্বীপের মতো দাঁড়িয়ে আছে ছোট একটি গ্রাম। বাজার করা, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া সহ এলাকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা নৌকা। চলাচলের জন্য একটি রাস্তা এই গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের কামনা। সেই কামনা সত্যি হচ্ছে এবার। ঐ গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য নির্মিত হচ্ছে একটি রাস্তা।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল জানান, গোপালপুর এলজিইডি রাস্তা হতে বেলেডাঙ্গা ওয়াপদা রাস্তা নির্মাম প্রকল্পের আওতায় ৬৬ লাখ টাকা ব্যায়ে ৬ হাজার ৭৪০ ফিট দৈর্ঘ্যরে এ সড়কটির নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। সড়কটি নির্মাণকাজ শেষ হলে বেলেডাঙ্গার জনগণের ভীষণ উপকার হবে। তাদের আর নৌকায় করে যাতায়াত করতে হবে না।
এ সড়কটির মাধ্যমে বেলেডাঙ্গা গ্রামের সাথে গোপালপুর সদরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হলো। আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গোপালপুর ইউনিয়নের বেলেডাঙ্গা গ্রামের শিশু শিক্ষার্থী পুলক বাইন বলেন, স্কুলে যাবার পথে এক সেট ড্রেস কাদা ও পানিতে নষ্ট হয়ে যেত। পরে পাকা রাস্তায় গিয়ে কাদামাখা ড্রেসটি পরিবর্তন করে সাথে নিয়ে যাওয়া অন্য সেট পরে স্কুলে যেতাম। আবার স্কুল শেষে কাদা মাখানো স্কুলড্রেস পরে বাড়ি আসতে হতো। রাস্তাটা হয়ে গেলে আমাদের দুই সেট ড্রেস নিয়ে স্কুলে যেতে হবে না। আর কাদা মাখানো ড্রেস পরে বাড়ি আসতে হবে না।
বেলেডাঙ্গা গ্রামের অসিত বাইন সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, একটি রাস্তা আমাদের বহুদিনের কামনা। অবশেষে আমাদের সেই কামনা পূরন হচ্ছে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে চিকিৎসা নিতে দেরি, ছেলে মেয়েদের স্কুলে যেতে ব্যাপক সমস্যা হতো। সেই সমস্যা কাটানোর জন্য আমাদের স্বপ্নের সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। তাই রাস্তাটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন বয়সের লোকজন সড়কটির নির্মাণ কাজ দেখতে ভীড় করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গৌতম মন্ডল বলেন, এই সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষ ভীষণ আনন্দিত। তাদের যে ভোগান্তি দূর হলো তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুশেন সেন বলেন, চলাচলের জন্য একটি সড়ক বেলেডাঙ্গাবাসীর স্বপ্ন ছিলো। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ নিচ্ছে। বহুবার একটি সড়ক নির্মানের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু বরাদ্দ পাইনি। অনেক চেষ্টার পরে এলাকার মানুষের স্বপ্ন পূরন করতে পেরেছি। তাই গোপালপুর ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। এ রাস্তা যেন স্বপ্নের সোনার হরিন।
বেলেডাঙ্গাবাসি রাস্তা পেয়ে আনন্দের জোয়ারে ভাসছে।
সময় জার্নাল/এমআই