নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল।
অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার কিছু আগে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় প্যানেলটি।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী এই ঘোষণা দেন। এ সময় প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের অভিযোগ, শিবির সমর্থিত প্যানেলকে জেতাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আঁতাত করেছে।
৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন হচ্ছে। সকাল নয়টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
ভোটগ্রহণ শুরুর চার ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রশিবির কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হওয়ার জন্য নীলনকশা করেছে।
জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জাকসু প্যানেল ঘোষণার পর থেকে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে আসছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপুল সাড়া পেয়ে আমরা যখন জাকসুতে পূর্ণ প্যানেল বিজয়ের আশা করছি, ঠিক সে সময় ভোট গ্রহণের আগের রাতে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখতে পাই যে জামায়াতে ইসলামীর কোনো এক অখ্যাত কোম্পানি থেকে যথাযথ ক্রয়প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্বাচন কমিশন জাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপার ও ভোট গণনার ওএমআর মেশিন সরবরাহ করেছে।’
নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেলকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে এমন করা হয়েছে অভিযোগ এনে শেখ সাদী হাসান বলেন, ‘আমরা এ নিয়ে ভোট গণনায় কারচুপির শঙ্কা করেছি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু একই কোম্পানির সরবরাহ ব্যালট পেপার দিয়েই আজকের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
এর এক ঘণ্টা পর সংবাদ সম্মেলনে করে নির্বাচনে ব্যাপক অসঙ্গতি ও অনিয়মের অভিযোগ তোলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট।
এই জোটের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেন, ‘আমরা গতকাল থেকে দেখতে পেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনারের যে পরিমাণ প্রস্তুতি থাকার কথা, তার একটি প্রস্তুতিও তারা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি।’
বিভিন্ন হলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল তাদের ভোট দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন আরিফ উল্লাহ।
দুই প্যানেলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে বিকেল চারটার কিছু আগে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল।
এমআই