তালুকদার হাম্মাদ, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ( ইবি) শিক্ষার্থীদের চিরপরিচিত স্থান ঝাল চত্বর। শিক্ষার্থীদের অন্যতম আড্ডাস্থল এই চত্বরটিকে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করায় রাতের বেলায় এর সৌন্দর্যে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। তবে দিনে দেখা যায় ঠিক এর বিপরীত রূপ। অল্প বৃষ্টি হলেই স্থানটি পানিতে ডুবে যায়, কর্দমাক্ত হওয়ায় হয়ে পড়ে চলাচলের অনুপযোগী। শিক্ষার্থীরা ঝাল চত্বরের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে ক্লাস করতে যাওয়ায় পথে বাধাগ্রস্ত হয়। এখানে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দোকান ও খাওয়ার হোটেল থাকায় বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দিনেরপর দিন কাদাভর্তি হয়ে থাকে জায়গাটি। এদিকে বাজেটের অভাবে সেখানে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঝাল চত্বরে বিভিন্ন ধরনের স্টেশনারী, কফিশপ, টি-স্টল, ভাজাপোড়ার দোকান, খাবার হোটেল ও বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবারের দোকান রয়েছে। এসব দোকানে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের ভিড় করে, আড্ডা দেয়। ক্লাস শেষে দুপুরে খাবার খেতে ঝাল চত্বরের হোটেলগুলোতেই আসেন শিক্ষার্থীরা। তবে বৃষ্টি হলেই বাধে বিপত্তি। পানিতে ভরে গিয়ে কর্দমাক্ত পিচ্ছিল হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে চত্বরটি। মাঝেমধ্যেই ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ওই জায়গার দোকানিরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এখানে বছরের বেশিরভাগ সময়ই পানি জমে থাকে। বৃষ্টিতে জায়গাটি কর্দমাক্ত হলে তাদের বেচাকেনাও অনেকাংশেই কমে যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ঝাল চত্বরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে জায়গাটির সংস্কারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাত হোসেন বলেন, পুরা বর্ষা জুড়ে স্থানটি বৃষ্টির পানিতে কাঁদায় ভরে থাকে যা নিতান্তই দৃষ্টিকটু দেখায় এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। কিন্তু এ সমস্যার সমাধান করতে প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আমরা চাই প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, আমরা ঝাল চত্বরে ঢালাই করে দেওয়া বা পার্কিং টাইলসের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি। আবার প্রত্যেকটা গাছের সাথে টাইলস সিঁড়ি করে বসার ব্যবস্থা করার চিন্তা করছি। আমরা এ বাজেটের ব্যাপারে প্রশাসনকে জানিয়েছি। ইউজিসি থেকে বাজেট অনুমোদন হলেই আমরা কাজ শুরু করব। নিষ্কাশনের বিষয়টা আসলে এস্টেট অফিসের দায়িত্ব, এটা ওরাই দেখবে।
এদিকে স্টেইট অফিসের প্রধান মো. আলাউদ্দিন বলেন, এটা প্রকৌশল অফিসের কাজ। আমি তাদের সাথে কথা বলছি। দেখি ভিসি স্যারের সাথে কথা বলে আমি একটা ডিমান্ড নোট দিয়ে দিব। ওইখানে মাটি দিলে আবার কাঁদা বেশি হবে তাই বালি দিলে ভালো হবে। ইট দিয়ে সলিং করে দিলে আর সমস্যা থাকবে না।
নিষ্কাশনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা শুধু ড্রেন ময়লায় আটকে গেলে পরিষ্কার করে দিতে পারি। কিন্তু এখানে তো কোনো ড্রেনের ব্যবস্থা নেই। তাই নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না। ড্রেনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রোকৌশল অফিসের সাথে আলাপ করতে পারেন।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে ভিসি স্যার ও ট্রেজারার স্যারের সাথে বাজেটের জন্য আমার কথা হয়েছে। ওই জায়গাটা কীভাবে সুন্দর করা যায় সে ব্যাপারেও ইঞ্জিনিয়ারের সাথে আমার কথা হয়েছে। বর্ষাকাল গেলে কাজও শুরু করার কথা। প্রথমে বালি দিয়ে রোলিং করবে৷ আপাতত বালি ইট আর সিমেন্ট দিয়ে মুখ মেরে দিতে বলেছি। আর পরবর্তীতে ইটের উপর ঢালাই দিয়ে দেওয়া যাবে। ড্রেনের বিষয়টা ইঞ্জিনিয়াররা ভালো বলতে পারবে।
এমআই