নুসরাত নাঈম সাজিয়া, রাজশাহী কলেজ:
অনুপ্রেরণাময় আধ্যাত্মিক দীক্ষার লক্ষ্যে রাজশাহী কলেজে অনুষ্ঠিত হলো ঈদ-ই- মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান-২০২৫।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় কলেজ মিলনায়তনে ইসলামিক কালচারাল ফোরাম (আইসিএফ)-এর উদ্যোগে এবং কলেজ প্রশাসনের সহযোগিতায় এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়।
অতিথিদের আসন গ্রহণের পর পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এরপরেই ছিল শিক্ষার্থীদের হৃদয় ছোঁয়া নাত পরিবেশনা। অনুষ্ঠানে প্রাণোজ্জ্বল স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিএফ এর উপদেষ্টা ও আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুর রাকিব।
আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. আফাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আতোয়ার রহমান।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজ উপাধ্যক্ষ ড. মোঃ ইব্রাহিম আলী ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর ড.মো. সেরাজ উদ্দীন।
এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ সহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে প্রাণোচ্ছল করে তোলে।
সংশ্লিষ্ট আলোচক বলেন,"শিক্ষার্থীদের মাঝে ইসলামী মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হলে এ ধরনের আধ্যাত্মিক আয়োজনের বিকল্প নেই। যুব সমাজের জীবনযাপন হতে হবে শৃঙ্খলাপূর্ণ। নিয়মিত নামাজ, কোরআনের শিক্ষা ও রাসুল (সা.)-এর জীবনদর্শন অনুসরণ ছাড়া সঠিক পথে থাকা সম্ভব নয়। তিনি সতর্ক করে দেন নৈতিক অবক্ষয় আজকের প্রজন্মকে গ্রাস করছে। এর প্রতিষেধক হতে পারে শুধু শরীয়তনিষ্ঠ জীবনব্যবস্থা।"
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। নৈতিক অবক্ষয়, ভোগবাদী সংস্কৃতি আর অসংযমের এই সময়ে এমন অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের মনে জাগায় আত্মপরিচয়ের বোধ।
মূলত উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনের ব্যক্ত হওয়া অনুভূতিই এই আয়োজনকে প্রাণবন্ত ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে।
এ প্রসঙ্গে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, এমন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার পর মনে হয়, জীবনটাকে আরও শৃঙ্খলিতভাবে গড়ার চেষ্টা করা দরকার। কেবল পড়াশোনা নয়, ভালো মানুষ হওয়ার দায়িত্বও আমাদের।
অন্য এক শিক্ষার্থী যোগ করে বলেন, আজকের আলোচনায় শুনলাম যৌবনকালই চরিত্র গঠনের সময়। এটা আমাদের জন্য বিশাল শিক্ষা। আমরা চাই নিজেদের জীবন ইসলামের আলোয় সাজাতে।
রাজশাহী কলেজের এ আয়োজন প্রমাণ করে যে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিক জ্ঞান বিতরণের ক্ষেত্র নয়, বরং আদর্শ জীবন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরণের মূল্যবোধ চর্চা ও নৈতিকতার পাঠশালা হিসেবে প্রভাব রাখতে পারে।
রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আমাদের এই আয়োজনটির মূল উদ্দেশ্যই হলো শিক্ষার্থীদের মাঝে ইসলামের সত্যিকারের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। যদি আমরা আজকের অর্জিত জ্ঞান থেকে ধারণা নিয়ে বিদ্বেষ, হিংসা ও অন্যায়মূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের বিরত রাখতে সজ্ষম হই এবং আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু থেকে পাওয়া শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে পারি, কেবল তখনই উক্ত আয়োজনটি সফল হবে।
দিনব্যাপী এই আয়োজনের শেষে অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। কলেজের বিভিন্ন বিভাগ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।সবশেষে সভাপতিরবক্তব্যের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটলেও শিক্ষার্থীদের মনে রয়ে যায় অনুপ্রেরণার বাতি।
এমআই