বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে অবসরের আট বছর, তবুও অফিস করেন দুই কর্কর্তা

বুধবার, অক্টোবর ২২, ২০২৫
লক্ষ্মীপুরে অবসরের আট বছর, তবুও অফিস করেন দুই কর্কর্তা

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে যা ঘটছে, তা কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম নয়,এটি আমাদের প্রশাসনিক দুর্বলতা, জবাবদিহিতার অভাব এবং সুশাসনের ব্যর্থতার প্রতিফলন। অবসরের পরেও অফিসে কর্মরত থাকার ঘটনা প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেমন সাংঘর্ষিক, তেমনি এটি জনস্বার্থের প্রতি চরম অবহেলার পরিচায়ক।

তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাবেক দুই প্রধান সহকারী হারুন অর রশিদ ও জাহিদুল হক অবসরের আট বছর পরও অফিসে নিয়মিত উপস্থিত থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। হারুন অবসর নিয়েছেন ৮ বছর ৯ মাস আগে, আর জাহিদুলের অবসরের মেয়াদ পেরিয়েছে প্রায় ৩ বছর। অথচ তারা এখনও অফিসের চেয়ার-টেবিল দখলে রেখে কার্যক্রম চালাচ্ছেন, যা নিঃসন্দেহে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও আইনের পরিপন্থী।

এতেই শেষ নয়, সদর হাসপাতালের আয়া রুনা আক্তারও ১১ বছর ধরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ষ্টেনোগ্রাফারের দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে তার নিয়োগই ছিল হাসপাতালের সেবাকাজে। এতে করে হাসপাতাল যেমন জনবল সংকটে পড়েছে, তেমনি স্বাস্থ্যসেবার মানও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, অবসরপ্রাপ্ত এই দুই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগসাজশে অফিসের টেন্ডার, ওষুধ ক্রয়, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িত। প্রশাসনের ভেতর গড়ে উঠেছে এক অদৃশ্য ‘সিন্ডিকেট’ যা নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রভাব, অর্থ ও সম্পর্কের জোরে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে জিম্মি করে রেখেছে।

এমন বাস্তবতায় প্রশ্ন ওঠে কেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর নীরব? প্রশাসন কি জানে না, নাকি জেনেও চোখ বন্ধ করে আছে? একজন কর্মকর্তা অবসরের পর অফিসে বসে কাজ করলে, তার অনুমোদন কে দেয়? সরকারী সম্পদের ব্যবহার, ফাইল পরিচালনা, টেন্ডারে অংশগ্রহণ, এসব যদি অবসরের পরও করা যায়, তবে অবসরের অর্থ কী?

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)–এর জেলা সভাপতি যথার্থই বলেছেন, এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে তাৎক্ষণিক তদন্ত জরুরি। নয়তো এমন অনিয়ম একসময় প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানে, জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়বে; যার ভয়াবহ পরিণতি হবে রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থার ক্ষয়।

একটি উন্নয়নশীল দেশের অগ্রগতি নির্ভর করে প্রশাসনিক শুদ্ধতা ও জবাবদিহিতার ওপর। তাই, এখনই সময় স্বাস্থ্য বিভাগে এই অনিয়মের লাগাম টেনে ধরা এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত দপ্তরে ‘অবসরের পরেও চাকরি’ নামের এই তামাশা আর চলতে পারে না।
সিভিল সার্জন আবু হাসান শাহীন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এই ঘটনা সুশাসনের প্রতি চরম অবমাননা। এখন প্রয়োজন দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, স্বচ্ছ তদন্ত ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার। রাষ্ট্রের প্রতিটি দপ্তর যেন মনে রাখে- পদ নয়, দায়িত্বই একজন কর্মচারীর প্রকৃত পরিচয়।

একে 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল