বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

রাবি শিক্ষকের হিজাব নিয়ে কটাক্ষের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মঙ্গলবার, অক্টোবর ২৮, ২০২৫
রাবি শিক্ষকের হিজাব নিয়ে কটাক্ষের  প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

আহসান শামীম, চবি প্রতিনিধি:

সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন ফেসবুকে পোষাকের স্বাধীনতা নিয়ে ফেসবুকে একটি বিদ্বেষমূলক পোস্ট করেন। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি)  নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে এ মানববন্ধন শুরু হয়।

'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ' এর ব্যানারে এ মানববন্ধন আয়োজিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চাকসুর নবনির্বাচিত ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও শাখা ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি নাহিমা আক্তার দ্বীপা, সহ-ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা, সহ-দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাতসহ নারী শিক্ষার্থীদের হল সংসদের অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দ।

এসময় চাকসুর ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও শাখা ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি নাহিমা আক্তার দ্বীপা বলেন, "রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মামুন রাকসু প্রতিনিধিদের হিজাব পরিহিত অবস্থায় শপথগ্রহণের একটি ছবি নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন এবং তার স্বাধীনতার উদাহরণ দিতে গিয়ে টু কোয়ার্টার প্যান্ট এবং মদ নিয়ে ক্লাসে আসার উদাহরণ দিয়েছেন। এটি আমাদের ধর্মীয় অনুশাসন এবং দেশীয় আইনের পরিপন্থী। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই, সেই সাথে আমরা হিজাবকে যারা অবজ্ঞা, অবমাননা করে এবং এরকম মনোভাব লালন করে তাদের প্রতি প্রতিবাদ জানাই।"

তিনি আরো বলেন, "একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের মানসিকতা হবে উদার, একটি নির্দিষ্ট পশ্চিমা সংস্কৃতিকে অনুসরণ করে বাংলাদেশের অন্য সব সংস্কৃতিকে অবমাননা করার কোন অধিকার তার নেই। পশ্চিমা সংস্কৃতিকে সে একজন মানুষের যোগ্যতা দক্ষতার পরিচায়ক মনে করছে কিন্তু আসলে কিন্তু সেটি অবান্তর ছাড়া কিছুই নয়।"

চাকসুর সহ-ছাত্রী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা বলেন, "তিনি পোষাকের স্বাধীনতা চেয়েছেন কিন্তু একজন নারী হিজাব পরে আসলে সেটি মানতে পারেন না। এরকম দ্বিচারিতামূলক আচরণ একটি প্রতিষ্ঠানে কখনো ভারসাম্য বজায় রাখেনা।  আপনাদের স্বাধীনতার মানে যদি হয় পশ্চিমা সংস্কৃতিকে প্রমোট করা, অন্যের ধর্মকে কটাক্ষ করা, হিজাবকে কটাক্ষ করা এবং নারীবিদ্বেষী আচরণ করা তাহলে সেই স্বাধীনতাকে আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যা৷ করি।"

সহ-দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল নুসরাত আদন বলেন, "আজকের প্রতিবাদ শুধুমাত্র একজন শিক্ষককের বিরুদ্ধে নয় বরং এমন একটি মানসিকতার বিরুদ্ধে যে মানসিকতা শিক্ষকতার মতো পেশায় থাকার পরেও একজন ব্যক্তিকে একটি বিদ্বেষী বার্তা প্রচারে সহায়তা করে। একজন শিক্ষক সমাজে আলো ছড়ান, আমাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু এমন একজন মানুষের কাছ থেকে যদি আমরা এরকম বিদ্বেষী একটি বার্তা পাই সেটি পুরো সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্নের বার্তা দেয়।"

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল সংসদের জিএস নাজিফা তাসফিয়াহ বলেন, "পোশাকে স্বাধীনতা যখন আসে তবে কেন শুধু সিলেক্টিভ প্রতিবাদ করা হয়। আমরা হিজাব পরে যখন নির্বাচিত হয়েছি তখন কেন এটাকে নিয়ে কটাক্ষ করা হচ্ছে। আমরা তো নির্বাচনে শুধু হিজাবী শিক্ষার্থীদের মেন্ডেট নিয়ে আসিনি। আমাদেরকে ভোট দিয়েছে হিজাবি নন হিজাবী এবং সব ধর্মের শিক্ষার্থীরা। আমরা দেখেছি হিজাব নিয়ে মন্তব্যটা করেছেন সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের একজন শিক্ষক, যদিও পরে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টাকে খুবই ছোট করে দেখছেন। উনার মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ এখানেই ঘটে যে তিনি যে সুক্ষ্মভাবে ইসলাম বিদ্বেষী তার পোস্টেই এটি ফুটে উঠে।"

তিনি আরো বলেন, "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮নং ধারায় বলা আছে, 'কোনো ওয়েবসাইট কিংবা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে যদি কারো ধর্মের অবমাননা করে তাহলে সর্বোচ্চ ৫বছরের শাস্তি এবং অর্থদণ্ডের কথা আছে।'  আইনগুলো কী শুধুই লিখিত থেকে যাবে? এগুলোর বাস্তবায়ন কী আমরা দেখব না বলে প্রশ্ন রাখেন তিনি।"

বেগম খালেদা জিয়া হল সংসদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নিশাত সালসাবিল সিকদার বলেন, "হিজাব শুধু আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ই নয়, হিজাব আমাদের ব্যক্তিত্ব এবং সম্মানের প্রতীক। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নয় আমরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই দেখেছি আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের হিজাবী নন হিজাবী ট্যাগিং করে আলাদা করে ফেলে। যার ফলে তারা নিজের ক্যাম্পাসেই সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়ে যায়।"

তিনি বলেন, "পাবলিক পোস্টে এমন একটি মন্তব্য যেই শিক্ষক করতে পারেন তার কাছে অবশ্যই ক্লাসে নারী শিক্ষার্থীরা নিরাপদবোধ করবে না। শুধু হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করেছেন এমনটি নয় তিনি মদপানকেও সাধারনীকরন করতে চেয়েছেন যা সমাজ অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ।"

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল