নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা জুলাই আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী বলছেন। অথচ তিনি ক্ষমতায় ফেরার চেষ্টা করছেন। এজন্য তার ব্যাপারে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, শেখ হাসিনার ব্যাপারে সবাইকে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে। শেখ হাসিনা আজকেও বলেছেন, জুলাইয়ের আন্দোলনকারী সবাই সন্ত্রাসী। ১৮ কোটি মানুষকে সন্ত্রাসী বলে ক্ষমতায় আসতে চায় আওয়ামী লীগ। সন্ত্রাসী বলে দেশের মানুষকে হত্যাযজ্ঞ করতে চায়। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
ফেব্রুয়ারিতে যথাসময়ে নির্বাচন হবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, সারাদেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোয়ার বইছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এ লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টাসহ সবাই দিনরাত কাজ করছেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেকে বলছেন, জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। এই বিতর্কগুলো পুরো পৃথিবীতে অনেক জায়গায় ১০-১৫ বছর ধরেও চলে। এটা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নাই। সবাই যদি একমত হতো তাহলে দেশে বাকশাল হতো না। দ্বিমত থাকবেই, এর ভিত্তিতে ঐকমত্যে গিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হবে। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। এটা খুব দ্রুতই হবে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হলো, নির্বাচন নিয়ে কোনও ধরনের অনিশ্চয়তার বিষয় যেন না থাকে। আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। কিছু কিছু থিংকট্যাংক বলতে চাচ্ছেন, এটা নিয়ে কৃষকের সঙ্গে, নারীদের সঙ্গে বা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হয়নি। যারা রাজনৈতিক দল, যাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ঐকমত্য কমিশন কথা বললো– রাজনৈতিক দলগুলো কী এই গ্রুপগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করে না? তাদের কী নারী উইং, শ্রমিক উইং নাই? থিংকট্যাংকগুলো নিজেরা নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য এসব মুখরোচক কথা বলেন। জুলাই সনদে সবকিছুই এসেছে। যেসব শাসনতান্ত্রিক বিষয় পত্রিকায় এসেছে আপনারা দেখছেন, কিন্তু অন্যান্য বিষয় সবই এসেছে। যদি ভাবেন আমরা ৯ মাসে সব ঠিক করে ফেলবো, সেটা হয় না।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ দেশে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। আমাদের চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জুলাই যে আন্দোলন সেটা প্রথম শুরু হলো কর্মসংস্থান নিয়ে। লাখ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। এমন সময় সেটা করতে হবে যেখানে আগ্রাসী কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা আসছে আপনার চাকরি কেড়ে নেওয়ার জন্য।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, এমন একটা রাজনৈতিক সমঝোতা করা যাতে সে ডানপন্থি হোক বা বামপন্থি, সে যেন গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল থাকে। এটাকে নিশ্চিত করা। না হলে দেশের বাইরে সঠিক বার্তা যাবে না। সঠিক বার্তা না গেলে এখানে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে না। আর এফডিআই না হলে কর্মসংস্থান বাড়বে না।’
এমআই