রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫

স্মৃতিকথা: ছবির ফ্রেমে জীবনের কবিতা

রোববার, নভেম্বর ৯, ২০২৫
স্মৃতিকথা: ছবির ফ্রেমে জীবনের কবিতা

মোঃ হৃদয়, ডিআইইউ প্রতিনিধি:

ঢাকার ব্যস্ততার ভেতরেও কিছু মুহূর্ত আছে, যেগুলো থেমে থাকতে চায় এক টুকরো হাসি, এক ফোঁটা চোখের জল, কিংবা দু’জন মানুষের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর প্রতিশ্রুতির মুহূর্ত। সেই মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমবন্দি করে রাখে এক প্রতিষ্ঠান  “স্মৃতিকথা”।

২০১৩ সালে জন্ম নেওয়া “স্মৃতিকথা” আজ বাংলাদেশের ফটোগ্রাফি জগতে এক উজ্জ্বল নাম। বসুন্ধরা রেসিডেন্সিয়াল এরিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটি শুধুমাত্র ছবি তোলে না, বরং প্রতিটি ছবিতে গল্প বলে, অনুভূতি আঁকে, আর স্মৃতিকে জীবন্ত করে তোলে।

একসময় এই প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল 'Memoirs' । পরে প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ইয়াসিন আলম নামটি পাল্টে রাখেন “স্মৃতিকথা” অর্থাৎ স্মৃতির ভাষায় বলা জীবনের গল্প। নামটির মধ্যেই যেন এক ধরনের শিল্প আছে এমন শিল্প, যা সময়কে ধরে রাখে, আলো আর ছায়ার মাঝে খুঁজে পায় আবেগের দোলাচল।

ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, সিনেমাটিক ভিডিও, প্রি-ওয়েডিং শুট, কর্পোরেট ইভেন্ট কিংবা পারিবারিক অনুষ্ঠান “স্মৃতিকথা”র কাজ মানেই নিখুঁত আলো, রঙ ও আবেগের সমন্বয়। ড্রোন, 4K ক্যামেরা, গিম্বল, প্রফেশনাল লাইটিং— সব আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় তাদের প্রতিটি ফ্রেমে ধরা পড়ে জীবনের উৎসব। তারা কাজ করেছে দেশের নামকরা শিল্পী ও তারকাদের সঙ্গে— মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপু বিশ্বাস, কেয়া পায়েল, তানিয়া বৃষ্টি, তৌসিফ মাহবুবসহ আরও অনেকে। প্রতিটি কাজেই তারা প্রমাণ করেছে ছবি শুধু দৃশ্য নয়, এটি এক অনুভূতির ভাষা।



“স্মৃতিকথা”-র প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ইয়াসিন আলম শুধু একজন ফটোগ্রাফার নন, তিনি এক শিক্ষক, এক স্বপ্নদ্রষ্টা। তিনি বিশ্বাস করেন, “ফটোগ্রাফি হলো এমন এক শিল্প, যা মানুষকে শুধু দেখতে নয়, অনুভব করতে শেখায়।” এ পর্যন্ত ২০০-রও বেশি তরুণকে তিনি বিনামূল্যে ফটোগ্রাফি শিখিয়েছেন এবং তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এই উদ্যোগে অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণ আজ জীবনের নতুন দিগন্ত খুঁজে পেয়েছে। কেউ হয়তো ড্রাগের অন্ধকার থেকে ফিরে এসেছে, কেউ খুঁজে পেয়েছে নতুন স্বপ্নের আলো। সত্যিই, “স্মৃতিকথা” শুধু ছবি তোলে না, জীবন বদলে দেয়।



১০,০০০-এরও বেশি ইভেন্ট কাভার করেছে “স্মৃতিকথা”। অসংখ্য বিয়ের ফ্রেমে ধরা পড়েছে হাসির রং, কান্নার ছায়া, ভালোবাসার গভীরতা। বিয়ের বিদায় বেলায় যখন কনের চোখে জল নামে, তখন শুধু অতিথিরাই নয়, “স্মৃতিকথা”-র ফটোগ্রাফাররাও থেমে যায় এক মুহূর্তের জন্য কারণ তারা জানে, এই লেন্সের পেছনে আছে এক জীবন, এক গল্প, এক অশ্রুভেজা অনুভূতি। তাদের প্রতিটি ক্লিক যেন বলে ওঠে “সময় চলে যায়, কিন্তু অনুভূতি থেকে যায়; আমরা সেই অনুভূতিগুলোকে ছবিতে বাঁচিয়ে রাখি।”

২০১৯ সালে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী আব্দুল মন্নান কর্তৃক “স্মৃতিকথা”-র প্রতিষ্ঠাতা মোঃ ইয়াসিন আলম ‘বেস্ট ফটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন। এটি শুধু একটি সম্মাননা নয়, বরং বছরের পর বছর নিরলস পরিশ্রমের এক মধুর স্বীকৃতি।



বর্তমানে “স্মৃতিকথা”-র টিমে রয়েছে ২০ জনেরও বেশি সৃজনশীল সদস্য। ভবিষ্যতে তারা ডকুমেন্টারি নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্ট কাভারেজ শুরু করতে চায়। প্রতি বছরই নতুন প্রজন্মকে ফ্রিতে ফটোগ্রাফি শেখানোর মাধ্যমে তারা দলে যুক্ত করে নিচ্ছে নতুন প্রাণ, নতুন স্বপ্ন।



“স্মৃতিকথা” শুধু একটি ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠান নয় এটি আবেগের নাম, ভালোবাসার এক ফ্রেম, স্মৃতির এক কবিতা। প্রতিটি ছবিতে তারা জীবনকে নতুনভাবে লেখে, যেমন কবি লেখেন তার প্রিয়তমাকে নিয়ে শব্দে নয়, অনুভূতিতে। “ছবি নয়, আমরা গল্প বলি আলো আর ছায়ার ভেতর দিয়ে।”

সময় জার্নাল/একে  


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল