নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইসলামি ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদেক কায়েম সারা দেশের মুক্তিকামী ছাত্র জনতার প্রতি খুনী হাসিনার দোসরদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, 'খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। আগামীর বাংলাদেশে খুনী হাসিনা ও তার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ যুবলীগের ঠিকানা এদেশে হবে না।'
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালে 'রান উইথ জবি শিবির' কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।
সাদেক কায়েম বলেন, 'জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের দোসররা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসরা এখনো বিভিন্ন স্থানে গুপ্ত অবস্থায় আছে। আমরা সকলকে শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবো। তাদেরকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করতে হবে। খুনী হাসিনাসহ তার দোসরদের বাংলাদেশ থেকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে। নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ একটি জঙ্গী গোষ্ঠী। এদেরকে প্রতিরোধ করতে হবে।'
জকসু (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনের তারিখ পেছানো নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডাকসু ভিপি। তিনি বলেন, 'জকসু নির্বাচনের ডেট পেছানো হয়েছে। আমার মনে হয় জকসুর ডেট পেছানোর জন্য ওপর থেকে কারো ওহি নাজিল হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আহ্বান আপনারা পক্ষপাতিত্ব করবেন না। আমরা চাই না শিক্ষক বনাম ছাত্র পরিস্থিতি তৈরি হোক।'
'রান উইথ শিবির কর্মসূচি'র গুরুত্ব তুলে ধরে সাদেক কায়েম বলেন, 'এই কর্মসূচি থেকে মেসেজ হল আমরা তরুণ প্রজন্ম যদি দেশের জন্য কিছু করতে চাই তাহলে আমাদের ফিজিক্যালি ফিট থাকতে হবে। আমরা দেখছি আমাদের তরুণ প্রজন্ম বিভিন্ন ধরনের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এর একটা কারণ হলো শরীরচর্চা না করা। প্রতিষ্ঠার থেকে ছাত্রশিবির এধরনের ক্রিয়েটিভ কাজগুলো করে আসছে। ফ্যাসিস্ট আমলে জনপরিসরে আমাদের এ কার্যক্রমগুলো করতে দেয়া হয়নি।'
এদিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে 'রান উইথ জবি শিবির' কর্মসূচিটি শুরু হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে কোর্ট এলাকা, রায় সাহেববাজার মোড়, ধোলাইখাল হয়ে ধূপখোলা মাঠে গিয়ে এটি শেষ হয়। জবি শাখা শিবিরের আয়োজনে ক্যাম্পস থেকে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল।
শাখা সূত্রে জানা যায়, এই কর্মসূচিতে তিন হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অংশ নিতে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক নারী শিক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন করলেও তারা মূল র্যালিতে অংশ নেয়নি বলে জানিয়েছেন শাখার নেতৃবৃন্দ।
এসময় শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিগবাতুল্লাহ সিগবা বলেন, 'এমন একটি আয়োজনের জন্য জবি শিবিরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং এই সংকটে বাংলাদেশের তরুণরাই সবসময় এগিয়ে এসেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি আবারও বাংলাদেশকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, আমাদের তরুণ সমাজ যদি সজাগ থাকে, ফিট থাকে তবে এই ফ্যাসিবাদী শক্তির মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা আধিপত্যবাদী শক্তি আছে, যারা বাংলাদেশে বিদেশী প্রভাব কায়েম করতে চায়—বাংলাদেশের তরুণ সমাজের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানাতে চাই।'
জবি শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, 'আজকের ‘রান উইথ জবি শিবির’ কর্মসূচির মূল প্রতিপাদ্য ‘চলো একসাথে হাঁটি, একসাথে দেশ গড়ি’। আমাদের এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা। আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণ করতে হলে সুস্থ থাকার বিকল্প নেই।'
তিনি জানান, 'আমাদের এ কর্মসূচিতে তিন হাজারের মত শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন করে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত।'
অনুষ্ঠানে জবি শিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল আলিম আরিফ ও সভাপতি রিয়াজুলের নেতৃত্বে শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি মাকসুদুর রহমান, আসাদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাহেদ, অফিস সম্পাদক ইব্রাহিম খলিলসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
একে