শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫

আট বিভাগে আটদিনে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব ইসিতে

শুক্রবার, নভেম্বর ১৪, ২০২৫
আট বিভাগে আটদিনে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব ইসিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বেশকিছু প্রস্তাব ও দাবি তুলে ধরেছে। এর মধ্যে অন্যতম, নিরাপত্তা সুবিধা বিবেচনা করে জাতীয় নির্বাচন একদিনে না করে আট বিভাগে আটদিন ভোটগ্রহণের প্রস্তাব জানায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

এছাড়া কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত অবাধ, সুষ্ঠু্ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চেয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি, কালোটাকার মালিক, অর্থপাচারকারী, রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতকারী ও ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিতদের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবিও তুলেছেন তারা। একই সঙ্গে প্রার্থীদের জামানতের পরিমাণ আগের ২০ হাজার টাকায় পুনর্নির্ধারণ, নির্বাচন পরিচালনায় কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবিও উঠে এসেছে একাধিক দলের পক্ষ থেকে।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এমন মতামত দিয়েছে। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

এদিন সকালে প্রথম পর্বের সংলাপে অংশ নেয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। পরে দুপুরে ইসির সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন- বিএনএম। রাজনৈতিক দলগুলোর কথা বলার জন্য ১১টি এজেন্ডা বেঁধে দিয়েছিল ইসি।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী বলেন, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা যাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সেভাবেই ইসিকে পদক্ষেপ নিতে হবে। একই দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ একদিনে না করে আট বিভাগে আটদিন করা এবং নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে রিটার্নিং অফিসারদের কোনো প্রার্থীর বাড়িতে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করেন।

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি জোবায়দা কাদের চৌধুরী শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে ইসির কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেন। একই দলের উপদেষ্টা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবু বলেন, আমরা সঠিক সময়ে নির্বাচন চাই এবং নির্বাচনের পরিবেশ যাতে উন্নত হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যথাসাধ্য চেষ্টা থাকতে হবে। আমরা যারা নির্বাচনি প্রচারণার কাজে থাকবো তাদের নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত করা হয়। আমরা যদি সমাবেশ করতে না পারি তখন আমরা তো নির্বাচন করতে পারবো না। সেক্ষেত্রে যেমন পরিবেশ নষ্ট হবে, তেমন নির্বাচনও বিঘ্নিত হবে।

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ড. চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বীর বিক্রম নির্বাচনে কালোটাকা ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য কমাতে ইসির কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন, কমিশন এখনো নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। অনেক দল সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। তফসিল ঘোষণার আগেই আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে জনগণ মনে করতে পারে- তারা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে এবং ভোট দিতে পারবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনীর বিরোধিতা করে জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতীক বেছে নেওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনি ব্যয় কমাতে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কার্যালয়ের বদলে ইউনিয়নভিত্তিক কার্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব দেন তিনি।

ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৩ দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ সময় দলটির চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন সালু বলেন, জামানতের টাকা ৫০ হাজার করা হয়েছে, এটা বুর্জোয়া দলগুলোর পক্ষে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু আমাদের মতো দলের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আগে যে ২০ হাজার টাকা ছিল- আমি দাবি করবো জামানত সেই ২০ হাজার টাকাই যেন রাখা হয়। একই দলের মহাসচিব আনিসুর রহমান দেওয়ান সংশোধিত আরপিও এবং প্রচারে পোস্টার ব্যবহার নিষিদ্ধ করাকে স্বাগত জানান।

বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ১০ দফা লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। দলটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, বড় দলগুলো নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এখনো বিশাল বিশাল মহড়া চলছে। ইসি এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, কোনো কমিশনই বলে না তারা নিরপেক্ষতা হারাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসে তারা আর নিরপেক্ষ থাকে না। এটা আমাদের অতীত ইতিহাস। তবে এই কমিশনের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক।

একে 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল