আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের প্রচারে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানিকে ঠেকাতে ‘শত্রু’ অ্যান্ড্রু কুওমোকেও সমর্থন করে বসেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মামদানিকে দেশ থেকে তাড়ানোরও হুমকি দেন। যারা তাঁকে ভোট দেবেন, তারা ‘বেকুব’– এমনটাও বলেছিলেন। কিন্তু এসবে কাজ হয়নি। নির্বাচিত হন মামদানি। আর অভিষেক ভাষণে তির্যক ঠাট্টা করে ট্রাম্পকে বলেন, ‘ভলিউমটা একটু বাড়িয়ে নিন।’
এসব তো সবার জানা। এগুলো কেবল ‘টক অব দ্য টাউন’ ছিল না, আলোচনা হয়েছে সারাবিশ্বে। এবার সেই ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটনে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন নবনির্বাচিত মেয়র। আজ শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এ বৈঠক হওয়ার কথা। এ বৈঠক কি কেবল আনুষ্ঠানিকতা, নাকি এর অন্য কোনো অর্থ আছে?
বৈঠক নিয়ে চলতি সপ্তাহে দুজনকেই কথা বলতে দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন জানায়, ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিতব্য ‘বহু প্রতীক্ষিত’ বৈঠকের খবর নিশ্চিত করেছেন খোদ ট্রাম্পই। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেন তিনি। স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে পোস্টটিতে তিনি মামদানির পুরো নাম উল্লেখ করেন, যেখানে
মধ্যভাগের ‘কওম’ পদবিও ছিল। তিনি জানান, মামদানি তাঁকে বৈঠকের জন্য অনুরোধ করেছেন। এরপরই লেখেন, ‘পরবর্তী বিবরণ আসছে!’
নবনির্বাচিত মেয়র মামদানির মুখপাত্র ডোরা পেকেক বলেন, নিউইয়র্ক শহরের মেয়র নির্বাচিত হলে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের ‘অনুষ্ঠানিকতা’ থাকে। ওই সাক্ষাতে তাদের মধ্যে কী আলোচনা হতে পারে, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, নবনির্বাচিত মেয়র ট্রাম্পের সঙ্গে ‘জননিরাপত্তা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ১০ লাখের বেশি নিউইয়র্কবাসী যে সামর্থ্যের এজেন্ডার পক্ষে ভোট দিয়েছেন’, তা নিয়ে আলোচনার পরিকল্পনা করেছেন।
গত কয়েক মাস ধরে মামদানির সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। তিনি তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’ হিসেবে ভুলভাবে চিহ্নিত করেন। সেই সঙ্গে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, মামদানি নির্বাচিত হলে শহর ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি উগান্ডায় জন্ম নেওয়া এবং ২০১৮ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া এ গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রীকে দেশ থেকে বহিষ্কারেরও হুমকি দেন। নিউইয়র্কের ফেডারেল তহবিল আটকে দেওয়ার কথাও বলেন।
কিন্তু সবকিছুর পরও গত নভেম্বরের নির্বাচনে নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হন মামদানি। তখন একাধারে জর্জিয়া, নিউ জার্সি, পেনসিলভানিয়া ও ভার্জিনিয়ায় হারের মুখ দেখেন রিপাবলিকানরা। তবে সবচেয়ে খারাপভাবে হার হয় নিউইয়র্কে।
এর আগে গত রোববার রাতে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি মামদানির সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেছেন। দুজনের সম্পর্ক সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু একটা সমাধান করব।’ পরদিন মামদানি জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করার আশা করছেন। তাঁর দল হোয়াইট হাউসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
ভোটে বিজয়ী হওয়ার কয়েক মাস আগেও ব্যাপক পরিচিতি ছিল না ৩৪ বছরের মামদানির। সামাজিক মাধ্যমে অনেক ফ্যান, ফলোয়ার পেলেও রাজনীতির মাঠে ছিলেন অখ্যাত। পরে তিনিই হন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরের মেয়র। আর বিজয় ভাষণে বলেন, তিনি চান নিউইয়র্ক দেশকে দেখাক যে, কীভাবে প্রেসিডেন্টকে পরাজিত করতে হয়। আগামী ১ জানুয়ারি মেয়র পদে শপথ নেবেন তিনি।
একে