শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারীতে মন্দিরে কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনায়; আদিতমারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন সরকারকে প্রধান অভিযুক্ত ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কমল কৃঞ্চ সরকারসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (০১ আগস্ট) বিকেলে আদিতমারী থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন উপজেলার চন্দনপাট বুড়িরদীঘি সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৃদ্ধশ্বরী রাধাগোবিন্দ ও দূর্গা মন্দির কমিটির সম্পাদক জ্ঞানদা মোহন।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনপাট বুড়িরদীঘি সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৃদ্ধশ্বরী রাধাগোবিন্দ ও দূর্গা মন্দির কমিটির মেয়াদ ২০২০সালে শেষ হওয়ার পর আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে আদিতমারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন সরকার আহবায়ক ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কমল কৃঞ্চ সরকারকে সদস্য সচিব করে মন্দির পরিচালনা করে আসছে।
একাধিকবার মন্দিরের কমিটি গঠন করার জন্য তাগিদ দিলেও তারা কোন কমিটি গঠন করেনি। তাই পুজারীরা সম্প্রতি সুমন্ত কুমার রায়কে সভাপতি ও জ্ঞানদা মোহন রায়কে সম্পাদক করে কমিটি গঠন করেন। তখন থেকে দু-পক্ষের মাঝে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়।
এদিকে শনিবার বিকেলে পূজারীরা মন্দিরে গেলে ভাইস চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন সরকার দলবল নিয়ে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র ছোড়া, রামদা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। এতে মন্দির কমিটির সভাপতি সুমন্ত কুমার রায় (৫০), সাংগঠনিক সম্পাদক নীলকান্ত রায় (৪৫) ও দপ্তর সম্পাদক বকুল চন্দ্র রায় (৩৫) গুরুতর আহত হন।
তাদের আত্নচিৎকারে স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় মন্দির কমিটির সম্পাদক জ্ঞানদা মোহন বাদী হয়ে আদিতমারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন সরকারকে প্রধান অভিযুক্ত ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কমল কৃঞ্চ সরকারসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে প্রধান অভিযুক্ত চিত্তরঞ্জন সরকারের সাথে বার বার মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
তবে অপর অভিযুক্ত কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কমল কৃঞ্চ সরকার বলেন, মন্দিরে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খলায় আমি উপস্থিত ছিলাম না। প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদের মাধ্যমে একটি কমিটি গঠন করার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। একটি পক্ষ গোপনে কমিটি গঠন করে এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে।
আদিতমারী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ জানান, মন্দিরে দুটি কমিটিকে কেন্দ্র করে মন্দিরে তালা লাগানোয় ভক্ত ও পূজারীদের পূজা কার্যক্রম ব্যহত হয়। যা সমাধানের জন্য আমরা গিয়েছিলাম। এ সময় নতুন কমিটির হাতে চাবি বুঝে দেয়া মাত্রই হামলার ঘটনা ঘটে। যা তদন্ত করছে পুলিশ।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সময় জার্নাল/এমআই