দীপঙ্কর পোদ্দার অপু, ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের গৌরিপুর গ্রামের আব্দুল সালাম শেখের ছেলে মো. সাহাদাৎ হোসেন (৩৪) পঞ্চমবারে অবশেষে উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতকার্য হলেন।পরিবারের দায়িত্ব, সন্তানের প্রতি কর্তব্য, বয়সের চাপ, শিক্ষা জীবনে একের পর এক অকৃতকার্যতা-এর কোন কিছুই দমাতে পারেনি তাকে। স্নাতকোত্তর অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তার এই অদম্য আগ্রহ বর্তমান থাকবে বলে তিনি জানান।
তিনি ভ্যান চালক সমিতির বোয়ালমারী পৌর শাখার সভাপতি। তার স্বপ্ন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন। তিনি বিশ বছর যাবত ভ্যান চালিয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ভ্যান চালানোর পাশাপাশি লেখাপড়া শেখার অদম্য আগ্রহের কারণে রাতে পরিবারের সকলে ঘুমিয়ে পড়লে এবং মাঝেমধ্যে দিনের অবসরে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইংরেজিতে তার বেজায় দখল এবং আগ্রহ। ইংরেজিতে তার বাকপটুতা দেখে খোদ শিক্ষিত ব্যক্তিরাও বিস্মিত। ব্যক্তিগত জীবনে সাহাদাৎ তিন সন্তানের জনক।
তিনি ২০১৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর চারবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অকৃতকার্য হন। করোনার কারণে ২০২০ সালের উচ্চ মাধ্যমিকে দেশের সব পরীক্ষার্থীকে অটোপাস দেয়ার কারণে সাহাদাতও অটোপাস পান। এতে তিনি বেজায় খুশি। এবার তার স্বপ্ন স্নাতক শেষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন।
সাহাদাতের ৬ বছর বয়সী মেয়ে মোসান্মাৎ আঁখি সুলতানা ময়না ইউনিয়নের গৌরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে এবং ৪ বছর বয়সী বড় ছেলে মোহাম্মদ আলী ওই একই বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিকে অধ্যয়নরত। ছোট ছেলে হিদায়েতউল্লাহ ছয় মাস বয়সী।
সাহাদাৎ জানান, ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩শ টাকা আয় হয়। পৈতৃক সম্পত্তির মধ্যে তার একটি টিনের ঘর এবং মাত্র ১০ শতাংশ ফসলি জমি আছে।
সাহাদাৎ বলেন, যত বছরই লাগুক আমি এম,এ পাস করবই। এটা আমার স্বপ্ন। চাকুরি প্রাপ্তির জন্য না, উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার বাসনা থেকে।
সময় জার্নাল/এমআই