রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজীবপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের আবেগঘন ফেসবুক লাইভ

সোমবার, আগস্ট ৯, ২০২১
রাজীবপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের আবেগঘন ফেসবুক লাইভ

রুহুল সরকার, রাজীবপুর প্রতিনিধি: সম্প্রতি 'রাজীবপুর সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দূর্ণীতির অভিযোগ' শিরোনামে কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে রাজীবপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ইউনুস আলী তার নিজের Principle Md Younus Ali নামে ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফেসবুক পেজে সোমবার রাত ১০ টার দিকে একটি আবেগঘন ফেসবুক লাইভ করেন। লাইভে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। ১০ মিনিটের ওই লাইভে তিনি তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ গুলোও খন্ডন করেছেন।
  
লাইভের শুরুতেই তিনি এলাকাবাসী, সুধী বৃন্দ ও গভর্নিং বডির সদস্যদের ছালাম জানিয়ে বলেন, আমার দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে আমি আমি চেয়েছিলেন এই কলেজ থেকে সন্মানের সাথে বিদায় নেব।

সম্প্রতি তার অর্জনকে ম্লান করার জন্য একটি কুচক্রী মহল উঠেপড়ে লেগেছে এবং তার বিরুদ্ধে অবপ্রচার চালাচ্ছে। কলেজ সরকারি করনের শেষ ধাপে আছে জানিয়ে তিনি বলেন শুধু শিক্ষক ও কর্মচারীদের আত্তীকরণ করলেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এই সময় কলেজের অধ্যক্ষকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করে দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকা এবং বিভিন্ন ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করা হয়েছে।

নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি আরও বলেন, রাজীবপুর সরকারি কলেজের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অত্যান্ত সুন্দর ভাবে পরিচালিত হয়। ২০১৭ সালে সরকারের সাথে ডিট অফ গিফট সম্পন্ন হয় কলেজটির। অভিযোগ করা হয়েছে ডিট অফ গিফট সম্পন্ন হওয়ার পর কলেজ ফান্ডের ১২ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা ইচ্ছে মত উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে অথচ কলেজ ফান্ড থেকে যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া অধ্যক্ষ টাকা উত্তোলন করতে পারে না। টাকা উত্তোলনের বিধি বিধান আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন গভর্নিং বডি বিলুপ্ত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও)সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। কলেজের কোন আর্থিক প্রয়োজন হলে ইউএনও মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে কোন খাতে কত টাকা খরচ করা হবে সেগুলো লিপিবদ্ধ করে টাকা উত্তোলন করে ভাউচারের মাধ্যমে খরচ করে রেজিষ্টার খাতায়ও লিপিবদ্ধ করা হয়।  

শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি করন হওয়ার আগেই বিধি সম্মত ভাবে ১৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। 

এসময় তিনি আরও বলেন ১৩ জনের নিয়োগ বিধিসম্মত ভাবে হয়নি বলে কলেজে চাকুরীরত কয়েকজন অভিযোগ করেছেন। এই ১৩ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধ হলে  অভিযোগ কারীদেরও নিয়োগও প্রক্রিয়া সঠিক হয় নি জানিয়ে বলেন কারন তারাও একই ভাবে নিয়োগ পেয়েছে।

তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ এর সাথে কথা বলে এবং সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমোতাবেক ওই ১৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

কলেজের এইচএসসি ও ডিগ্রি শাখার শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র ও নম্বর পত্র বিতরণে ভুয়া রিসিট ব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো অফিস সহকারীরা বিতরণ করে নির্দিষ্ট ফি নিয়ে। পরে রিসিটের সাথে মিলিয়ে টাকা জমা ও ক্যাশ করা হয়। কোন অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না।

কলেজের এফডিআর ফান্ড থেকে টাকা তুলে ননএমপিও শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ঈদুল আযহায় তাদের কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট বিধি মেনে এফডিআর এর টাকার লভ্যাংশ থেকে তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। মূল টাকা এখনও ব্যাংকে গচ্ছিত আছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, এই কলেজে আমার দীর্ঘ কর্ম জীবনে প্রতি ৩ থেকে ৪ মাস পরপর অভ্যান্তরীণ ভবে অডিট করা হয়। অডিট চলাকালীন সময়ে কেউ আমার বিরুদ্ধে কখনও কোন অভিযোগ আনে নি।

কলেজটি ২০১৭ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ কলেজ, তিনি শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ এবং একজন শিক্ষার্থী শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয় জানিয়ে বলেন, আমার চাকরী আর এক বছরের মত আছে। একটি মহল কর্মজীবনের শেষ সময়ে এসে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও কুৎসা রচনা করছে এবং সামাজিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন কলেজটি সরকারী করনের শেষ দারপ্রান্তে। তাকে এবং প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে যেন আর মিথ্যাচার করা না হয়। আমি একসময় থাকবো না কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি থাকবে। প্রতিষ্ঠানের সুনামের স্বার্থে এসব অপপ্রচার বন্ধ করার অহব্বান জানান তিনি।

লাইভের শেষাংশে তিনি বলেন, আমার চাকুরীক্ষেত্র যদি কোন ভুল ভ্রান্তি থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার না করার জন্য আবারও অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন কর্মজীবনের শেষ প্রান্তে আমি বাকী সময়টুকু আমি সুনামের সাথে চাকরী শেষ করতে চাই। 

এবিষয়ে কথা হলে রাজীবপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ইউনুস আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা মিথ্যা অভিযোগ গুলো ভিত্তিহীন। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এগুলো করা হচ্ছে। তাই নিজের নৈতিকতার দায়বদ্ধতা থেকে লাইভে এসে অভিযোগের সকলকে বিষয় গুলো তুলে ধরেছি এবং জানিয়েছি।

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল