ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান :
একদিকে করোনার মহামারি অন্যদিকে ডেংগু, চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব। সবই ভাইরাস জনিত রোগ।
যেকোনো ভাইরাস জনিত ইনফেকশনে রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট কমে যেতে পারে। রক্তের প্লেটলেট কমে গেলে গায়ে র্যাশসহ শরীরের যেকোনো জায়গা দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতে পারে। এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে প্লেটলেট কাউন্ট ২০-৩০ হাজারের নিচে না নামলে সাধারণত স্বতঃস্ফুর্তভাবে রক্তক্ষরণ হয় না (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া)। প্লেটলেট কাউন্ট ৫০ হাজারের উপরে থাকলে (কোন অপারেশন করা না লাগলে) তড়িঘড়ি করে কোন ঔষধ বা প্লেটলেট ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজন নাই।
তবে রক্তের সিবিসি বা ব্লাড ফিল্ম রিপোর্ট অবশ্যই ভালো মানের হতে হবে।
নিচের ছবিগুলো ভালো করে খেয়াল করে দেখুন।
একজন রোগীর একই সময়ের রক্তের সিবিসি পরীক্ষায় প্লেটলেট কাউন্ট অটোমেটেট সেল কাউন্টার মেশিনে দিয়েছে মাত্র ৪২ হাজার যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। কিন্তু মাইক্রোস্কোপের নিচে ম্যানুয়ালি চেক করে দেখা গেল প্লেটলেট কাউন্ট প্রায় ২ লাখ (স্বাভাবিক দেড়-সাড়ে চার লাখ)। আলাদা আলাদা দুইটা রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসা কিন্তু দুই রকম হয়ে যায়।
মেশিনে কেন কম দিয়েছে?
এই রোগীর মীন প্লেটলেট ভলিউম (এমপিভি) অর্থাৎ প্লেটলেট এর সাইজ বড় বড় ছিল। তাই মেশিন বড় বড় প্লেটলেট কাউন্ট করতে পারে নাই। ফলে প্লেটলেট কাউন্ট কম এসেছে।
আরো অনেক কারনেই সিউডোথ্রম্বোসাইটোপেনিয়া হতে পারে।
তবে প্লেটলেট কাউন্ট কমে গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যাবশ্যক।
ম্যান বিহাইন্ড দ্যা মেশিন। অফ কোর্স স্কিল ম্যান।
অহেতুক প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন না দিই। যাকে লাগবে তাকেই দিই।
লেখক : ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান
সহকারী অধ্যাপক (হেমাটোলজি)
রক্তরোগ ও ব্লাড ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ।