আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তালেবান সারা বিশ্বের কাছে তার একটি গ্রহণযোগ্য ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চায়। তবে দেশের কিছু এলাকায় তালেবান বেশ কঠোর আচরণ করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এটা অনেকাংশেই নির্ভর করে ঐ এলাকার তালেবান অধিনায়কের কী মনোভাব তার ওপর।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বরাতে জানা যায়, আফগানিস্তানের যেসব জায়গা তালেবানের নিয়ন্ত্রণে সেখানকার কোনো কোনো জায়গা থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য নির্যাতনের ক্রমবর্ধমান খবর আসছে। পশ্চিমা দেশের কর্মকর্তারা তালেবানকে সতর্ক করে বলেছেন, তালেবান জোর করে দেশ দখল করলে আফগানিস্তানকে একঘরে করা হবে।
তালেবান যখন এর আগে ক্ষমতায় ছিল সে সময়ের কথা যাদের মনে আছে তারা শরিয়া আইনকে ব্যবহার করে তালেবানের নিষ্ঠুর শাস্তির কথাই উল্লেখ করেন। গত মাসে দক্ষিণাঞ্চলীয় হেলমান্দ প্রদেশে তালেবান শিশু অপহরণের অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে ধরে একটি সেতু থেকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়। যুক্তি হিসেবে তারা বলে, ঐ দুই জন দোষী প্রমাণিত হয়েছে।
বিবিসির একদল সাংবাদিক বালখ্ প্রদেশে গিয়েছিলেন। তাদের পৌঁছানোর দিনে তালেবানের একটি আদালতে বিচারকার্য চলছিল। মামলাগুলোর সবই ছিল জমিসংক্রান্ত বিবাদ। তালেবানের শাস্তি নিয়ে অনেকের মনে ভয় থাকলেও বিচারের দ্রুততা নিয়ে সন্তোষ দেখা যায়। কারণ দুর্নীতিবাজ সরকারি ব্যবস্থায় তার ন্যায়বিচার পেতে বহু সময় লেগে যেত। ‘আমাকে বহুবার ঘুষ দিতে হয়েছে,’ বলছিলেন এক মামলার ফরিয়াদি।
তালেবান বিচারক হাজি বদরুদ্দিন বললেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত চার মাসে তিনি কাউকে কোনো শারীরিক শাস্তি দেননি। উচ্চতর আদালতে গুরুত্বপূর্ণ রায়গুলো পর্যালোচনা করার জন্য আপিলের সুযোগ আছে বলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের শরিয়া আইনে এটা পরিষ্কার। বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে কেউ যৌন সঙ্গম করলে সেই নারী বা পুরুষের শাস্তি হবে ১০০ ঘা চাবুক। কিন্তু কোনো বিবাহিত মানুষ এই কাজ করলে শাস্তি হবে পাথর ছুঁড়ে মৃত্যু। চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাত কেটে ফেলার বিধান রয়েছে।
এসব শাস্তি আধুনিক যুগে অচল বলে যে সমালোচনা রয়েছে তিনি তাকে মেনে নিতে নারাজ। তার মতে, বাচ্চা চুরি করা হচ্ছে, এটা কি ভালো? এক জনের হাত কেটে দিয়ে যদি সমাজের স্থিতিশীলতা রক্ষা করা সম্ভব হয়, সেটা কি ভালো না?’ দেখা গেছে, কিছু কিছু এলাকায় ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো অঞ্চলে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না বলেও খবর পাওয়া গেছে।
সময় জার্নাল/আরইউ