নোমান ইমতিয়াজ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চলতি সপ্তাহ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চার শিক্ষক। এমনকি ক্লাসরুম খুলে না দিলে গাছতলায় কিংবা খোলা মাঠে ক্লাস নেওয়া হবে বলে শুক্রবার ও শনিবার ওই চার শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এ ঘোষণা দেন।
চার শিক্ষক হলেন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কণক।
শুক্রবার রাতে প্রথমে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আমি আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতি সোমবার-মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার বিভাগে উপস্থিত থাকবো। ক্লাস রুম খুলে না দিলে গাছতলায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিট করবো এবং তারা পড়তে চাইলে পড়াবো। (হুম আপনাদের তথাকথিত স্বাস্থ্যবিধির কথাও মনে রাখবো। সবাইকে আমন্ত্রণ)।’
শনিবার বিকালে একই রকম ঘোষণা দেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘সপ্তাহে ছয়দিন (শুক্রবার বাদে) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আমি অফিসে শিক্ষার্থীদের সময় দেবো। মাঝেমধ্যে দু’একদিন ব্যত্যয় ঘটতে পারে।’
একই দিন সন্ধ্যায় সশরীরে ক্লাস নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কণক তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাপের টাকা খরচ করে শিক্ষার্থীদের মেসে থাকতে হচ্ছে, এতিমের মতো ঘুরতে দেখে কষ্ট লাগে। গাছতলায়, নতুবা খোলা মাঠে ক্লাস নিতে চাই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের ক্লাস চলবে।’
শনিবার রাতে আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, গত ২৬ মে রাজপথে প্রতীকী ক্লাস নিয়ে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আহ্বান জানিয়েছিলাম। অন্যথায় গাছতলায় ক্লাস শুরু করবো আমরা। সবকিছু খোলা, শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে কোন যুক্তিতে? কিছুটা দেরিতে হলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের অনেকেই ক্লাস শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। সাধুবাদ জানাই আপনাদের। থাকবো আমিও, ইনশাআল্লাহ। ছাত্রছাত্রীরা থাকলে অবশ্যই ক্লাস নেবো। ক্লাসরুম খোলা না পেলে গাছতলায় শুরু হবে পাঠদান।’
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার একাধিক তারিখ দিয়েও পরে তা বাতিল করা হয়। সর্বশেষ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না বলে জানিয়েছেন সরকার।
সময় জার্নাল/আরইউ