ডা. শামীমুল মাওলা :
একটু আশ্চর্য্যই বটে হয়ে পড়লাম!
মনে হয় ফট করে বয়স নাকি পয়ষট্টি হয়ে গেছে আমার!
নিমোক্ত ব্যাপার গুলো দেখুনঃ
১. কেউ কখনো আমাকে বলে নি যে আমি উত্তম ব্যক্তি (কারন ছিল, আটপৌরে চেহারা আর বিশাল দুইকানের ভেতর উস্কখুস্ক চুলের মাথা, চুল আচড়ানোর চাইতে কলোনীতে ডাঙ্গুলি আর গুল্লি খেলতে পছন্দ করতাম!)
২. কোন সমসাময়িক মেয়ে আমাকে প্রশংসা করে নি, বা আমার প্রতি আলাদা কোন ফেভার দেখায় নি (কারন একেবারেই সাদামাটা বেশ ক্ষীন স্বাস্থ্য, রূপ গুন বা বিত্ত বৈভব আমার ছিল না-ফুটবল মাঠে খেলতে গেলে কিছুক্ষনের ভেতরেই মাথা ঘুরতো, কোন ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় এমন কি প্রাথমিক টেস্টেও সফলকাম হই নি!)
৩. যৌবনে কখনো কোন পর্যায়েই আমি উল্লেখযোগ্য কোন সাফল্য প্রদর্শন করতে পারিনি! এ ধরনের "থার্ড পারসন সিঙ্গুলার পার্সন"কে কে মূল্যায়িত করবে?
৪. ডাক্তারী চাকুরী জীবনেও সফলতা নেই, যদিও নানা নামকরা সংস্থায় দেশে ও বিদেশে কাজ করেছি, সেখানেও খুবই আটপৌরে ছিলাম বোধ হয়!
৫. আমার দ্বারা সম্ভবতঃ কখনো কারো কোন উপকার হয় নি, আর ক্ষতি কারার মতো ক্ষমতা বোধ হয় ছিল না!
৬. এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছিলাম, নানা হাটে নানা বাটে, পারিবারিক প্রয়োজনে নানা কর্মে, চাকুরীতে! সে সব কর্মক্ষেত্রেও আমি যে খুব একটা পছন্দের কর্মী বা মানুষ ছিলাম, তা আমার মনে হয় না!
৭. এই প্রায় সাইত্রিশ আটত্রিশ বছরে মানুষের চিকিতসা, চিকিতসা ব্যাবস্থা অর্গানাইজ বা হাসপাতাল তৈরীর নানা কাজে যুক্ত ছিলাম, কাজগুলো কোনটি খুব বড় থাকলেও আর আমার পজিশন ভাল থাকলেও সেখানেও নিজ কিংবা পরিবারের জন্যে তেমন কিছুই করতে অপারগ ছিলাম, যদিও আর কিছু না থাক, ছেলেবেলা থেকে আমার সাহসের কমতি ছিল না!
৮. অতঃপর এই আসছে ২৫শে আগস্ট নাকি আমার জন্মদিন, পয়ষট্টি বছরে পড়লাম!
৯. আইনতঃ ও প্রকৃতিগত ভাবে এর ভেতরেই আমার চিরকালীন মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু মরিনি, দিব্যি বেচে বর্তে ফেসবুক লিখছি!
এটাই আমার এই বয়সের সাত কাহন! আমি এখনো বড় পজিশনেই কাজ করি বিখ্যাত হাসপাতালে!