সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
শতভাগ ভোট পেয়ে টেনিউরড ফুল প্রফেসর হওয়ার মাধ্যমে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা কলেজের সর্বোচ্চ একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করলেন বাংলাদেশি অধ্যাপক সেজান মাহমুদ। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের সহকারী ডিন এবং প্রফেসর হিসাবে কর্মরত। এ বিষয়ে নিজ ফেসবুক টাইম লাইনে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ডা. সেজান মাহমুদ। তিনি লিখেছেন, “ইন্টারনাল মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের” শতভাগ ভোট পেয়ে ডিপার্টমেন্টে স্থায়ী টেনিউরড ফুল প্রফেসর নিয়োগ পেলাম। আমি আগের ডিপার্টমেন্ট মেডিক্যাল এডুকেশনেও পড়াবো (এই ডিপার্টমেন্ট এমডি ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আর ইন্টারনাল মেডিসিন এমডি ছাত্রছাত্রী ও রেসিডেন্ট, ক্লিনিক্যাল বিষয় নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত)।
সময় জার্নাল পাঠকদের জন্য ডা. সেজান মাহমুদের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল।
আমি জীবনে সজ্ঞানে কোন মানুষের ক্ষতির উদ্দেশ্য নিয়ে কোন কাজ বা পদক্ষেপ নিয়েছি বলে আমার জানা নেই। এমন কি কেউ শত্রুতা করলেও তার ক্ষতি হবে ভাবলে কোনকিছু করা থেকে বিরত থাকি। এটা জোর গলায় বলতে পারি। মানুষ কিন্তু তেমন না; অন্তত বাঙালিরা। শুধু হিংসা থেকে এর আগে আমার এসিস্ট্যান্ড ডিন হবার সময় মিথ্যা রিপোর্ট দিয়েছিল কেউ কেউ। এবারও দ্বিতীয় দফায় এমন শত্রুতা করেছে। আমি জানি কারা হতে পারে কিন্তু কিচ্ছু না ব’লে আপন কাজে মনোযোগ দিয়ে তাদের আরো ঈর্ষান্বিত করাই আমার প্রতিশোধ!
যা হোক। আমেরিকার ফ্যাকাল্টিদের টেনিউর হওয়ার কথা আগেও বলেছি। একটু বোঝার সুবিধার জন্যে বলি, আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাত্র ১০-১৫% ফ্যাকাল্টি টেনিউরড হতে পারে, যা একেবারে পারমানেন্ট পজিশন। এছাড়া রিসার্চ পজিশন, নন-টেনিউরড, এডজাঙ্কট, ভলান্টারি এরকম নানান পদের শিক্ষক আছেন।
টেনিউরড এবং প্রমোটেড হতে টিচিং (যার বিচার করে ছাত্রছাত্রী এবং সহকর্মীরা), স্কলারলি একটিভিটি (রিসার্চ পাব্লিকেশন, গ্রান্ট, পীয়ার রিভিউ) এবং সার্ভিস (ইউনিভার্সিটি এবং ন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে) এক্সিলেন্ট লেভেল-এ পারফর্মেন্স থাকতে হয়। আর টেনিউরড ফুল প্রফেসর হওয়াই সর্বোচ্চ একাডেমিক স্বীকৃতি। এটা আমি পেয়েছি সেই ২০০৯ সালে। তারপর ফুল প্রফেসর ২০১৪ সালে।
যখন কেউ টেনিউরড হয় তখন তাঁকে একটি ডিপার্টমেন্টে স্থায়ী পদ দেয়া হয় বা মাদার-ডিপার্টমেন্ট দেয়া হয়। যেমন আমার মাদার ডিপার্টমেন্ট হলো “মেডিক্যাল এডুকেশন”। এরপর যার যার একাডেমিক দাম বা চাহিদা অনুসারে অন্য ডিপার্টমেন্ট তাঁকে যৌথ-টেনিউর দিতে পারে বা নতুন কোন ইনসেনটিভ দিয়ে পুরোপুরি নিয়ে নিতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে নতুন ডিপার্টমেন্টের সকল টেনিউরড প্রফেসরের মেজোরিটি ভোট পেতে হবে।
এতো বড় ভূমিকা দিলাম এজন্যে যে এই বছরে “ইন্টারনাল মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের” শতভাগ ভোট পেয়ে ডিপার্টমেন্টে স্থায়ী টেনিউরড ফুল প্রফেসর নিয়োগ পেলাম। আমি আগের ডিপার্টমেন্ট মেডিক্যাল এডুকেশনেও পড়াবো (এই ডিপার্টমেন্ট এমডি ছাত্রছাত্রীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আর ইন্টারনাল মেডিসিন এমডি ছাত্রছাত্রী ও রেসিডেন্ট, ক্লিনিক্যাল বিষয় নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত)।
এই খুশির খবর দিচ্ছি এজন্যে যে আমরা যেন নোংরামির মধ্যে না যাই। দিন শেষে মানুষের কদর্যতা বাংলাদেশ সম্পর্কেই নিম্ন ধারণা দেয়। আমরা একেক জন একেকটা দূতের মতো যেন কাজ করতে পারি। বাংলাদেশ থেকে আরো মানুষের সুযোগ বাড়াতে পারি। বাংলাদেশের মুখ উজ্জল হোক আরো!!
আনন্দের ভাগ নিচ্ছি কারণ, আমি জানি আমার প্রকৃত বন্ধুর সংখ্যাই বেশি!