সময় জার্নাল প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার কারণেই বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা-কোভিশিল্ড, সিনোফার্মের ভেরোসেল, ফাইজার ও মডার্না এই ৪টি টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। প্রধানমন্ত্রীর হাসিনার প্রচেষ্টায় অবশ্যই দেশের সকল মানুষকে টিকার আওতায় আনা
হবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় ৩০ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি কর্তৃক আয়োজিত ‘যথাসময়ে সবার জন্য করোনার ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণ’ বিষয়ে ছায়া সংসদে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ এসব বলেন।
বিএসএমএমইউ’র ভিসি বলেন, বিশ্বের করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই ভাইরাসটি মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানামুখী উদ্যোগ নেন। ভাইরাসটি প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু করলে আগেভাগেই যাতে এই ভ্যাকসিন বা টিকা জনগণকে বিনামূল্যে প্রদান করা যায় তার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নেন। ইতোমধ্যে একটি সফল গণটিকাদান ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হয়েছে। ২ কোটির বেশি মানুষকে প্রথম ডোজের টিকার আওতায় আনা হয়েছে এবং এদের মধ্যে ৬১ লাখেরও বেশি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে দেশেই করোনা ভাইরাসের টিকা উৎপাদনের কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন তাই বাস্তবায়ন করেন। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই এই সাফল্যের মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় অবশ্যই বাংলাদেশের সকল মানুষকে টিকার আওতায় এনে বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদান করা সম্ভব হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় যেমন একটা মানুষও না খেয়ে মরবে না, কোভিড টিকার ক্ষেত্রেও একইরকম হবে। চীন রাশিয়া আমেরিকা সহ আরও কয়েকটা দেশের কাছ থেকে টিকা আনা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জেলা থেকে বর্তমানে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম সম্প্রসারিত হচ্ছে। টিকা দিলেই কোভিডের ভয় শেষ হয় না। অন্যান্য সকল স্বাস্থ্য বিধি মানার ব্যাপারে সরকারের সকল প্রচারণা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলছে। লকডাউন, শাটডাউন, ঘরবন্দী ইত্যাদি সকল কর্মসূচির মাধ্যমে কোভিড কে ভারত, ইন্দোনেশিয়া বা ইউরোপের মত বিপর্যয় করতে দেয়নি সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, যত টাকাই লাগুক দেশের সকল উপযুক্ত মানুষের টিকা দেওয়া শেষ করতে। যারা সরকারের টিকা কার্যক্রমের বিষয়ে সন্দিহান তারা নিছক সস্তা সমালোচনার জন্যই এটা করে। তাই একথা বলা যায় - সরকার যেভাবে আন্তরিকতার সাথে টিকার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাতে সময়মত লক্ষ্য পূরণে সফল হবে। হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে সংক্রমণের চেইন ভেঙ্গে যাবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কোভিড এর ক্ষেত্রেও " ভ্যাক্সিন হিরো " খেতাব অর্জন করবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশে নেতৃত্বস্থানীয় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখছে। দেশে সর্ববহৎ ভ্যাকসিন সেন্টার বা টিকাদান কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত। ইতোমধ্যে এই কেন্দ্র হতে ৯৩ হাজার ২ শত ২৬ জনের প্রথম ডোজ ও ৫৯ হাজার ৪ শত ৮২ জনের দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ৪টি কোম্পানির টিকা প্রদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা সেন্টারে ইতোমধ্যে সাড়ে ১২ হাজার করোনার রোগী সেবা নিয়েছেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কোভিড ফিল্ড হাসপাতালে ৩৮১ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ পিসিআর ল্যাবে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯ শত ১১ জনের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বেতার ভবনের ফিভার ক্লিনিকে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৬ শত ৮৪ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। বহির্বিভাগে পোস্ট কোভিড ফলোআপ ক্লিনিক চালু রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
সময় জার্নাল/ইএইচ