সেলিম আহমদ তালুকদার, সুনামগঞ্জ : ঢাকা-সিলেট সড়ক ৬ লেন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হলেও সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক কেন নয়? এমন দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন সুনামগঞ্জ সদর আসনের সাংসদ এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রাফিক পয়েন্টে সুনামগঞ্জবাসীর ব্যানারে তিনি বিশাল গণ সমাবেশের আয়োজন করেন। সমাবেশে সদর-বিশ্বম্ভরপুর এলাকা থেকে শত শত মানুষ মিছিল সহকারে দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সমাবেশস্থলে এসে জমায়েত হন। লোকে লোকারন্য হয়ে উঠে গণসমাবেশ।
এসময় তিনি বলেন, একনেকে ঢাকা-সিলেট সড়ক ৬ লেন প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এমপি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে আমাদের ডেকেছেন। আমি সেদিন ১৭ হাজার কোটি ব্যায়ে ৬ লেনের এ সড়কটি সুনামগঞ্জ পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার দাবি জানিয়ে ছিলাম।
পরবর্তীতে আমি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে গিয়েছি। কিন্তু দু:খের বিষয় ঢাকা-সিলেট সড়ক অনুমোদন হলেও সুনামগঞ্জবাসী বঞ্চিত থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জে মেগা মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। অবশ্যই তিনি হাওরবাসীর দাবির প্রতি আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুনামগঞ্জ-সিলেট পর্যন্ত মাত্র ৬৭ কি: মিটার সড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করার দাবি জানান।
এ দাবি আমার একার নয়, গোটা সুনামগঞ্জবাসীর। আমরা পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে নিয়ে দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চাই।
এ সময় তিনি পরিকল্পনামন্ত্রীর মনে কোন কষ্ট থাকলেও হাওরবাসীর মনের কষ্টের কথা ভেবে অবশ্যই তিনি মনের কষ্ট বাদ দিয়ে জনতার দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করার অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, হাওরের রাজধানী সুনামগঞ্জ। এখানে পর্যটন বিকাশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য চাই ৬ লেন সড়ক। সমাবেশে ধারারগাঁও-হালুয়ারঘাট সেতু, চলতি নদীতে ব্রীজ, ডলুরা শুল্ক ষ্টেশন দ্রুত নির্মাণ করার দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, ২৫০ শয্যা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে মানুষকে মৃত্যুর মুখে পতিত হতে হয়। হাসপাতালে ডাক্তার থাকার কথা ৫৯ জন, আছেন মাত্র ১৭ জন। এ সংকট দুর করার জন্য সংসদে কথা বলেছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়েছি। কিন্তু বছরের পর বছর যায় এ সংকট দুর হয় না। তাই রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি তুলি। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জে অসংখ্য নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে ঘরবাড়ী। পানি সম্পদ মন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে জরুরী ভিত্তিতে পাউবো যেন কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়। হাওরে অপ্রয়োজনীয় বাঁধ অতিরিক্ত বিল নিয়ে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি যতটুকু কাজ ততটুকু বিল পরিশোধের আহবান জানান প্রশাসনের প্রতি। অন্যথায় জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
সাজ্জাদুর রহমান সাজুর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি সাইফুর রহমান সামছু, জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী খুশনুর, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব সাবেক প্যানেল মেয়র মণির উদ্দিন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাস্টার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এড. আবুল হোসেন, রশিদ আহমদ, মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হক, কোরবাননগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বরকত, দক্ষিণ বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ আহমদ, মহিলা কাউন্সিলর পেয়ারা বেগম প্রমুখ।
সময় জার্নাল/আইএম