সর্বশেষ সংবাদ
কাব্যগ্রন্থের ভূমিকা লেখা আমাকে মানায় না, যার একটা কবিতার বইও নেই, যার একটি কবিতাও এ পর্যন্ত কোথাও প্রকাশিত হয়নি, সে কি না লিখবে ভুমিকা? এ যেন সর্বাঙ্গ-প্রতিবন্ধীকে চন্দ্রজয়ের আমন্ত্রণ জানানো। অনায়াসেই উপেক্ষা করা যেত, যদি তা না হত অবুঝ স্নেহের প্রবল দাবি! হাশিম Ôহ্যাঁ', আমি Ôনা'; হাশিম নাছোড়বান্দা, আমিও নাচার -এই করে করে অবশেষে হার মানতে হলো আমাকেই।
হাশিমের পান্ডুলিপি খুলে বসি। সামান্য মুহূর্তের ব্যবধান, তারপর- কবিতার পৃষ্ঠা থেকে সমকালের নির্দয় রক্তাক্ত তরল ছিটকে এসে চটচটে আঠালো করে তোলে অনভূতি :
স্বপ্নতাড়িত মানুষ ওড়ে মরীচিকার ডানায়,
সাগরের উত্তাল শরীর তাজা তাজা রক্তে ভিজে গেছে,
মরুর বালুকার আলোয় তরুণ স্বপ্নেরা কাতরাচ্ছে;
কিশোরীর আর্তনাদ অনুরণিত হয় বারবার বাগানবাড়ির বিছানায়।
আরেক জায়গায় পড়ি, Ôবারুদের গন্ধ মেখে প্রতিনিয়ত ঘুমিয়ে পড়ে/বিকেলের খোঁড়া সূর্য ’ - চলিষ্ণু সময়ের অব্যর্থ ছবিটা কী সার্থকভাবেই না ধরা পড়েছে এই পংক্তিতে। অন্যত্র দেশের ইতিহাস আর গ্রিক পুরাণের সমান্তরাল পাঠেও রক্তাক্ত নিষ্ঠুর বাস্তবেরই আর্তনাদ শুনি :
এক আকাশ মায়াভরা বত্রিশ নম্বর বাড়িজ্জনিরাপদ জেলখানার নিষ্ঠুর
ইটজ্জরায়ের বাজারের কচি কচি ঘাসজ্জ ট্রয়গামী জাহাজে
আর্টিমিসের তৃষ্ণার্ত পূজাবেদিজ্জভূমধ্যসাগরের সমস্ত জলজ্জ অর্গোসের নীলাম্বর...
রাঙা রক্তে রক্তিম আদি পিতাগণের প্রথম রাজপ্রাসাদজ্জ
তবে বিপন্ন সময়ের এই ছবিই শেষ কথা নয়। কোথাও আশাটা বেঁচে থাকে, রোদটা মরে না :
গাঢ় আঁধারের বুক চিরেজ্জ
নবজাতকের চোখে রাঙা রোদ চিকমিক করে।
হাশিম সচেতন কবি। কালচেতনা আর যুগযন্ত্রণার পাশাপাশি কবিতার ভাষিক আর আলংকারিক কারিকুরিও তাঁর অধিগত। আমার বিশ্বাস, হাশিমের কবিতা পাঠকের ভালো লাগবে।
প্রফেসর মোহাঃ সাইদুর রহমান
অধ্যাপক,
বাংলা বিভাগ
ইসলামী
বিশ্ববিদ্যালয়।
বি.দ্র.: প্রফেসর মোহাঃ সাইদুর রহমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলে গেছেনে। তার মৃত্যুতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা শোকাহত। জীবদ্দশায় তিনি কবি হাশিম কিয়ামের প্রথম প্রকাশিতব্য মহানরক কাব্য গ্রন্থের ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন কিন্তু কাব্যগ্রন্থ নিজে চোখে দেখে যেতে পারেননি। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রকাশ করা হল।
সময় জার্নাল/ইম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল