শাহীন ভূঞা: বৃক্ষ তোমার নাম কী? ফলে পরিচয়। ছাত্র তোমার গর্ব কী? বই, খাতা, কলমে সদা বিদ্যালয়ে হাস্য রয়। করোনা বাংলাদেশে আগমনের ৯ম তম দিনে শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকি এড়াতে শিক্ষামন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সকল স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করে। এর প্রেক্ষিতে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের পদচারণা বন্ধ হয়ে যায়, শিক্ষার্থীরা বন্দী হয়ে পড়ে ঘরে। এই ছুটি এখনো চলমান রয়েছে। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সংক্রমণ হার শতকরা ৫শতাংশে না নেমে আসলে ছুটি আরো বাড়তে পারে। তবে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
দীর্ঘ এই বন্ধে শিক্ষার্থীরা নানা ক্ষতির মুখে পড়েছে। কেউ কেউ আসক্ত হয়ে পড়েছে অনলাইন গেম এ। আবার অনেকেই পরিবারের হাল ধরতে কাজে যোগ দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার নাম বলতে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, করোনা কেড়ে নিয়েছে আমার পড়ালেখা। আমার বাবা একজন দিনমজুর। করোনার ফলে তিনি ঠিকমতো কাজ পায় না। যার ফলে সংসারের অভাব মিটাতে আমাকে গাড়ির গ্যারেজে কাজ নিতে হয়েছে। ঐ শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও পুনরায় পড়ালেখায় ফিরতে পারবো, তার আর সম্ভাবনা দেখছি না।
ওয়ালিউল্লাহ নামের এক অভিভাবককে তার সন্তানের লেখাপড়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ও অনলাইনে ক্লাস করতে হবে বিধায় ছেলেকে মোবাইল কিনে দিয়েছিলাম। এখন সে প্রায় সময়ই পাবজি গেমস খেলে। অথচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু থাকার সময় সে সর্বদা পড়ালেখায় মনোযোগী ছিলো। বাসার টিভিটা ও সে দেখতো না। তার ছেলে একটা বেসরকারি বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। তিনি আরও জানান, তার ছেলের বন্ধুদেরও তার ছেলের মতোই অবস্থা।
এছাড়াও আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই দীর্ঘ বন্ধে অনেক শিক্ষার্থী খারাপ অভ্যাসে জড়িয়ে যাচ্ছে, বাড়ছে বাল্যবিবাহ। বাল্যবিবাহের কারণে নারী শিক্ষায়ণে দেখা দিচ্ছে অনিশ্চয়তা। অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, যে দীর্ঘ বন্ধের ফলে তাদের মস্তিষ্কে একাকিত্বের প্রভাব পরছে। এই দীর্ঘ বন্ধের পর অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে যাবেন বলে শিক্ষাবিদদের অনেকে মন্তব্য করেছে।
দীর্ঘ এই বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা যাবে সেশন জট। এরফলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়া শেষে সরকারি চাকরি পরিক্ষা দেওয়া থেকে অনেকে বাদ পড়বেন বয়সসীমার জন্য। যা ভবিষ্যতে তীব্র সংকট ধারণ করবে চাকরি বাজারে।
সময় জার্নাল/এমআই