শৈশবে
বালিশের নিচে থাকত কাপড়ের পুতুল,
চুলের ফিতা, ক্লিপ আর কানের দুল।
কিছু মার্বেল, পাঁচ গুটি খেলার গুটিগুলো,
মায়ের দেয়া সিকি, আধুলি আর টাকাগুলো।
কৈশোরে
বালিশের নিচে থাকত সিনেমার গানের খাতা,
শরৎ, নিমাইয়ের উপন্যাস, নজরুলের কবিতা।
সাদাকালো ফটোতে শাবানা, কবরী, ববিতা, সুচরিতা,
রঙ্গিন সব ছবি, জুড়ে চিত্রালি পুর্বাণীর পুরা পাতা।
তারুণ্যে
বালিশের নিচে থাকত ফর্মুলা অঙ্কের,
নোট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জটিল সব বিষয়ের।
নীল কাগজে লেখা, হলুদ খামে মোড়া পত্র,
রুলটানা খাতায় কাঁচাহাতে লেখা যত কবিতার ছত্র।
যৌবনে
বালিশের নিচে থাকত ছোট্ট ছোট্ট কাঁথা, জামা আর,
তোয়ালে মোড়ানো গরম দুধের ফিডার।
হাতঘড়ি রেখে দিয়ে সময় দেখি বারে বারে,
অফিস যেতে হবে কখন যে ভোর হবে।
এখন
বালিশের নিচে থাকে মোবাইল, চাবি,
পেইন কিলার, এন্টাসিড, ইনহেলার সবই।
রেখে দিয়ে একগোছা তসবির মালা,
অপেক্ষায় থাকি, কবে সাঙ্গ হবে সব খেলা।
এতবড় জীবনের দিনগুলো কেটে গেলো বেশ,
কখনো হয়নি প্রয়োজন বালিশের নিচে রাখা,
ছুরি, কাঁচি, খুর, পিস্তল, কাটা রাইফেল,
তবে কি জীবনের পরীক্ষায় করলাম ডাহা ফেল?
কবি পরিচিতি :
জেসমিন আরা বেগম, আমেরিকা প্রবাসী,
প্রাক্তন উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, (বিপিএটিসি)।