নিজস্ব প্রতিবেদক।সময় জার্নাল : করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্কুল-কলেজ খোলার পর পঞ্চম শ্রেণির, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী বাদে বাকি সবার সপ্তাহে একদিন করে সশরীরে ক্লাস নেয়া হবে। আর এইচএসসি, এসএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাসে আসতে হবে। তবে প্রাক্–প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস বন্ধই থাকছে।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে প্রাক্–প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস চালু করা হবে। এখন প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরু হবে।
এদিকে রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশে করোনার সংক্রমণ দ্রুত কমে যাচ্ছে। জুলাই মাসের তুলনায় সংক্রমণ ৭০ শতাংশ কমেছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হবে। প্রথম দিন চার-পাঁচ ঘণ্টা ক্লাস হবে। পর্যায়ক্রমে এই ক্লাসের সংখ্যা বাড়বে। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকালে শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
দীপু মনি বলেন, শুরুর দিকে ২০২১ সালে যারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী তাদের প্রতিদিন স্কুলে আসতে হবে। এছাড়াও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাসে আসবে।
তিনি বলেন, স্কুলে প্রবেশের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করাতে হবে। স্কুলে আপাতত কোনো অ্যাসেম্বলি হবে না। তবে ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি বা খেলাধুলা চলবে, যাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো অবস্থানে থাকতে পারে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে চেকলিস্ট পূরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। র্যান্ডম স্যাম্পলিং করে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলে বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নেয়া হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলাকালে কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সে সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। অভিভাবকরা যখন তাদের সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাবেন তখন তার পরিবারের কেউ কিংবা শিক্ষার্থীর করোনার উপসর্গ নেই তা নিশ্চিত করবেন। তার সন্তানের মাধ্যমে যেন অন্য কোনো শিক্ষার্থী সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা না থাকে সে ব্যাপারে সচেতন থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে তখন করোনা সম্পর্কিত যত ধরনের গাইডলাইন, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) যা যা হালনাগাদ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে শিক্ষক ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিনের শারীরিক তাপমাত্রা মাপা, কারও কোনো উপসর্গ আছে কি-না তা পরীক্ষা করা এবং শ্রেণিকক্ষে সবার মুখে মাস্ক পরা আছে কি-না তা নিয়মিত পরীক্ষা করবেন। মাস্ক ছাড়া কাউকে ক্লাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের মুখে মাস্ক পরিয়ে ক্লাসে পাঠাবেন।
বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, আইডিসিআরের প্রতিনিধিসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
সময় জার্নাল/আরইউ