বুধবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১
রেজাউল করিম রেজা,কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের জগমনের চরে অবস্থিত নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ধরলা নদীর করালগ্রাসে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। দফায় দফায় ভাঙ্গনের কবলে পড়া নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টি জগমনের চর এলাকার নন্দদুলাল গ্রামের ২ হাজার পরিবারের একমাত্র শিক্ষা পাঠশালা। নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝড়ে পড়েছে ৪ শতাধিক কোমলমতি শিশু।
প্রায় ৫০ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার শঠি শিক্ষার্থী দেশের নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে অনেক উচু জায়গায় স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে ধরলা নদীর কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে স্কুলটি। স্থানীয়রা সেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ভবনের আসবাসপত্র দরজা জানালা ইট কাঠ ভোগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে রেখেছে। এই ঐতিহ্য বাহী বিদ্যাপীঠের ভবনের মালামাল আস্তে আস্তে চুরি হয়ে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ হতে।
স্থানীয়দের দাবি যত দ্রূত সম্ভব আগের জায়গায় নির্মাণ করা হউক নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।
নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেনীতে পড়া শিক্ষার্থী জায়দুল.জনি মাহিন বলেন, আমার বাবা গরিব মানুষ জগমনের চরে স্কুল না থাকায় আর লেখাপড়া শিখতে পারি নাই। স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবক বাদশা, হামিদুল, বলেন ,স্কুল পুনরায় স্থাপন হলে আমাদের এলাকার কোমলমতি শিশুরা শিক্ষার আলো ফিরে পাবে।
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়াম্যান সাইদুর রহমান বলেন, নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে যাওয়ায় জগমনের চরের ২ হাজার মানুষের সন্তানদের একমাত্র এই বিদ্যাপীঠটি পুনরায় চালুর জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। ইতিমধ্যে স্কুলটির অনেক শিশু ঝড়ে পড়েছে।
নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি আকবর আলী বলেন, এই স্কুল ছাত্র ছাত্রীর স্কুল না থাকায় বিভিন্ন হোটেল মোটেল এ শিশু শ্রম দিচ্ছে। এলাকাটি চরাঞ্চলে হওয়ায় কেউ গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা জগমনের চরের এলাকাবাসী স্কুলের জন্য মাটি ভরাট করে রেখেছি। সরকার ইচ্ছে করলে ভবন উঠাতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, নন্দ দুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে। বুধবার সকালে পরিদর্শনে গিয়েছি। যতদ্রূত সম্ভব পুনরায় স্থাপনা নির্মাণ করে চালু করা হবে।
প্রসঙ্গতঃ এবারের বন্যায় জেলায় ৫টি প্রাথমিক স্কুল নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। ১৫ টি স্কুল নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। এই শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুল না থাকায় লেখা পড়া শিখতে পারছেনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকরা স্কুলটি পুনরায় আগের জায়গায় জগমনের চরে নির্মানের জন্য সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
সময় জার্নাল/এমআই