বুধবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১
সময় জার্নাল ডেস্ক। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ ব্যাচের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন লেবু আজ বৃহস্পতিবার সকালে মারা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মৃত্যু ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়। সকাল বেলা ফেসবুকে এসে আল আমিনের মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারলাম। তাকে নিয়ে তালাশ খ্যাত মঞ্জুরুল করিম
https://www.facebook.com/MunzurulKarimTV কিছু কথা লিখেছেন যা আমাকে ভীষণভাবে আবেগাপ্লুত করে তোলে। তার লিখার কিছু অংশ তুলে ধরলাম।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর ২০২১) তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেখলাম- জ্বর আর ঠান্ডা কাঁশির কথা লিখেছে। আজ সকালে শুনি, সে আর এই পৃথিবীতে নেই।
আহা জীবন, আহারে জীবন!!!
লেবুর জীবনের গল্পটা অন্যরকম। আমি নিজেও এর পুরোটা জানতাম না। আজ যত জানছি, ততই গা শিউরে উঠছে। গলা বন্ধ হয়ে আসছে।
লেবু'র দুই ভাই ভ্যান চালায়। গতকাল সে নাকি তার বাবাকে বলেছে- পারলে কিছু টাকা পাঠাতে। তার কাছে নিজের চিকিৎসা করার টাকা নেই। আজ তার বাবা বাজারে যাবে ঘুটা (গোবর শুখিয়ে তৈরি করা জ্বালানি) বিক্রি করতে। তারপর ছেলেকে টাকা পাঠাবে।
আহারে! সেই দরিদ্র, অতি দরিদ্র বাবা!
সকালে আমাদের আসনের এমপি মোশাররফ ভাই এর ছোট ভাই জামাল আমাকে ফোন করে কান্না করছে। কয়েকদিন আগে নাকি লেবু তার কাছ থেকে অনার্স এর ফরম ফিলাপ এর জন্য টাকা চেয়েছিল। জামাল ভাই তাকে টাকা দিতে গেলে বলেছে- ফরম ফিলাপ এর তারিখ পিছিয়েছে, এখন আর লাগবে না।
লেবু হয়তো তার পরিবারের চেহারা বদলে দিতে পারতো। পরিবার হয়তো তার মুখের দিকেই তাকিয়ে ছিল। ঐ পরিবার থেকে একটা ছেলেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো কত বড় সংগ্রাম হতে পারে, কত বড় সাফল্য হতে পারে।
লেবুকে নন্দীগ্রামের অনেক মানুষ চিনতো। লেবু তার সীমানা অতিক্রম করেছিল। চাইলে চিকিৎসার টাকা সে কারো কাছ থেকে নিতে পারতো অনায়াসে। কিন্তু সে তার ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দেয়নি।
লেবু'র পরিবারের সংগ্রাম আর শেষ হলো না। তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন লেবু'র সাথে সাথে কবরে চলে গেলো।
(আজিজ রাজুর টাইমলাইন থেকে থেকে সংগৃহীত)
সময় জার্নাল/