বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে আগামীকাল

শনিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১
দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে আগামীকাল

সময় জার্নাল ডেস্ক :

আগামীকাল রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক  ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের মধ্য দিয়ে বহু কাঙ্খিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনায় এনে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে প্রায় আঠারো মাস কয়েক দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।

প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা সশরীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার ঘোষণা এখনো না আসলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা আসতেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। 

এদিকে শিক্ষার্থীরাও বিশেষ করে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের শিক্ষার্থীদের মাঝেও এসেছে উৎকন্ঠাহীন আনন্দ।

চলতি বছরের শুরুতে নানা নির্দেশনার মধ্য দিয়ে এসএসসি বা সমমানের এবং এইচ এসসি বা সমমানের পরীক্ষা নেয়ার কয়েক দফা সিদ্ধান্ত হলেও তা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি কভিড-১৯ এর প্রাদূভার্বের কারণে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । 

এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি নানাভাবে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রামণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

গত ৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের মন্ত্রী পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ডা.দীপু মনির সভাপতিত্বে আয়োজিত এক বৈঠকে আগামীকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভাশেষে  জানানো হয়, চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে। অন্যদিকে, প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে একদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসার নির্দেশনা রয়েছে।

চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে আসবে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও রোজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবে। অন্যদিকে, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রী।

শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন, চলতি বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ইতোমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে। তারা প্রতিদিন ক্লাস করলে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়ে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে জেএসসি, জেডিসি, পিইসি পরীক্ষাসহ বার্ষিক পরীক্ষাও সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্দেশনার ক্ষেত্রে তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতে শ্রেণি কক্ষে শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা প্রতিদিন তাদের পর্যবেক্ষণ করবেন। এ জন্য একটি সার্ভিলেন্স টিম কাজ করবে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের আগে তৃণমূল বা মাঠ পর্যায়ের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করার আগে তা সম্পূর্ণ তৈরি আছে কি-না তা মনিটরিং করা সম্পন্ন হবে। কোন প্রতিষ্ঠানে কভিড-১৯ সংক্রামণের ঝুঁকি থাকলে স্থানীয় পর্যায়ে তার অবস্থান বিবেচনায় তা বন্ধ করার ঘোষণাও থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার শুরুতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মনিটরিং করা হবে। আগত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সামাজিক দূরত্ব মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করার নির্দেশনা রয়েছে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আপাতত কোন অ্যাসেম্বলী হবে না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থ্যতার কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের খেলাধূলা বা  ফিজিক্যাল অ্যাকটিভিটিজ চলবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দৈনিক চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ক্লাস নেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে এর সময়সীমা বাড়তে পারে। এছাড়া প্রতিদিন প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চেকলিষ্ট পূরণ করে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে।
করোনাভাইরাস সংক্রামণের হার শতকরা ৫ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা থাকলেও জুলাই মাসের সংক্রামণ ৭০ শতাংশ কমেছে উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রী  শ্রেণি কক্ষে পাঠদান শুরুর ঘোষণা দেন। এদিকে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর(মাউশি) এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) থেকে যথাযথ স্বাস্থবিধি অনুসরণ করে পাঠদান কর্মসূচি কঠোরভাবে মনিটরিংসহ নানা সচেতনতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা ও শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনতে সারাদেশেই সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে জোর প্রস্তুতি। শিক্ষক-কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন ও সমন্বয় সভা করে শিক্ষার্থীদের জন্য নানা কার্যক্রম নিচ্ছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে স্যানিটাইজেশন করা, থার্মোমিটারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠানে কিউ মেনে সারি বদ্ধ ভাবে  প্রবেশ, মাস্ক পরিধান নিশ্চিকরণ,শরীরের তাপমাত্রা চেক করাসহ বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি তাদেরকে ‘জেড’ শেপে শ্রেণিকক্ষে আসন বিন্যাস উল্লেখযোগ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন সময়ের জন্য দিনভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস করা হলেও থাকছে না চেনা ডেইলী রুটিন। প্রতিদিন দুটো ক্লাস শেষে একটি শরীরচর্চা বা বিনোদন ক্লাস নেয়ার কথা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে শ্রেণিতে পাঠদানের সময়সীমা বাড়ানো হবে।

দীর্ঘদিন পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আসা উপলক্ষে কোন কোন শিক্ষণা প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকে বেলুন ও কৃত্রিম ফুল দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোন সময়ে কিভাবে শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে যাবে তা নিয়েও নির্দেশনা দিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণায় প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ পরিস্কার করাসহ মোট উনিশ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় জনস্বার্থ ও বিষয়ে চারটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম চালু করার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান,শিক্ষক মন্ডলী,শিক্ষার্থী, কর্মচারী, পরিচালনা পর্ষদ-অভিভাবকদের জন্য নির্দেশনামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

বীরশ্রেষ্ঠ  মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের সিনিয়র শিক্ষক শেখ আমিনুর রহমান জানান, সরকারি সব ধরনের নির্দেশনা অনুয়ায়ী আগামীকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে। সব ধরনের স্বাস্থ্য সতর্কতা নেয়া হয়েছে। নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থার সঙ্গে তাদের সুবিধার্থে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’টো গেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের  প্রবেশ ও বের হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন,শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বরাবরই নিয়মানুবর্তিতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে। মাসে কয়েক দফায় সমন্বয় সভা হয়ে থাকে,তবে করোনাকালীন সময়ে এটি আরো জোরদার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে  আরো  আনা নেয়ার বিষয়ে আরো স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে মাউশি অভিভাবকদের জন্য আট দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া কোন কোন প্রতিষ্টান জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান খোলার কয়েকদিন শোভন পোষাক পরিধান করে শ্রেণিকক্ষে আসতে পারবে। তবে উক্ত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম বানাতে হবে।


সৌজন্যে : বাসস। 



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল